Disclaimer: The discussion of the darker aspects of psychology (Love Bombing, Decoy and Silent Treatment) aims to alert you. By doing so, you can take necessary steps to cope with such situations. It is not my intention for you to apply these techniques on any particular individual after learning about them.
বিশেষ সতর্কতা: মনোবিজ্ঞানের অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনাকে সাবধান করানো। এতে করে আপনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবেন এই ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে। আমার উদ্দেশ্য নয়, আপনি এসব টেকনিক জানার পর তা কোনো ব্যক্তি বিশেষের উপর প্রয়োগ করুন।
লাভ বোম্বিং (Love Bombing)
কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখবেন আপনার কল্পনার বাইরে ঘটে চলেছে এমন এক সম্পর্ক যা আপনাকে রীতিমতো ‘Maladaptive Daydreaming’ করাচ্ছে। এই প্রথমবার আপনার মনে হচ্ছে, পারফেক্ট একজন লাইফ পার্টনার পেয়ে গেছেন। যদি এমন হয়, তাহলে নিজেকে অবশ্যই কিছু প্রশ্ন করবেন। কারণ পৃথিবীতে পারফেক্ট বলে কিছু নাই; হোক সেটা যে কোনো সম্পর্ক।
সাধারণত এই ধরণের সম্পর্কে আপনার পার্টনার আপনাকে এতকিছু দেওয়া শুরু করেছে যা আপনি মনে মনে কখনো কল্পনাও করেন নি। সকালবেলার ‘শুভ সকাল’ টেক্সট থেকে শুরু করে রাতের বেলা ‘শুভ রাত্রি’ জানাতে মোটেই ভুল করছেন না।
আপনার প্রতি তার মনোযোগ অপরিসীম। আপনার প্রতি তার আগ্রহের শেষ নাই। আপনি যখন যেটা যেভাবে চাচ্ছেন তিনি ঠিক অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করছেন। আপনার জন্মদিন থেকে শুরু করে বিশেষ দিনগুলোতে উপহারে এবং উইশ দিয়ে আপনাকে ভরিয়ে তুলছেন। এ যেন স্বর্গের সুখ আপনি পৃথিবীতে পেয়ে গেছেন।
কিন্তু বিনিময়ে তিনি রাখছেন না কোনরকম কোনো প্রত্যাশা। আপনার ভালো থাকা-ই যেন তার ভালো থাকা। আপনি যখন যেখানে ঘুরতে যেতে চাইছেন, যখন যেটা খাইতে চাইছেন, যখন যে রেস্টুরেন্টে বসে আলাপ জমাতে চাইছেন, যখন যে মার্কেটে যেতে চাইছেন তার কিছুই আর বাকি থাকছে না। আলাদিনের প্রদীপের মতোন এক হলেও আপনার উইশ লিস্ট বিশাল বড় হলেও তিনি তার সবই পূরণ করছেন। কিন্তু আপনি ভুলে গেছেন ‘Disney Princess Syndrome’ এর মত করে কোনো রাজকুমার/রাজকুমারী পার্থিব জগতে আপনাকে কোনোদিন উদ্ধার করতে আসবে না।
যদি আপনার জীবনে এমন কিছু হঠাৎ ঘটতে শুরু করে তাহলে সাবধান থাকুন এবং নিজেকে প্রশ্ন করুন,
১. আপনি নিশ্চয় আপনার পার্টনারের থেকে অবশ্যই কিছু প্রত্যাশা করেন কিন্তু তিনি যা আপনাকে উপহার দিচ্ছেন তা অতিরিক্ত পর্যায়ের নয় তো?
২. তিনি কি আপনার থেকে দ্রুত কমিটমেন্ট চাইছেন? তাহলে তার যুক্তির পেছনের যুক্তি কি?
৩. তিনি কি আপনার আবেগের প্রতি সত্যিই এত আগ্রহী?
৪. আপনার সৌন্দর্যের প্রশংসা কি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে করছেন? কথায় কথায় কি ফ্লার্ট করছেন/কমপ্লিমেন্ট দিচ্ছেন যা সাধারণ সম্পর্কে বিদ্যমান থাকে না বা সচরাচর ওমন দেখা যায় না।
৫. যোগাযোগের ক্ষেত্রে তিনি কি আপনার সাথে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখছেন? এবং সর্বশেষ, তিনি কি মোটেই কোনো বাউন্ডারি সেট করছেন না আপনার জন্য?
এসব প্রশ্নের উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয় তাহলে এই সম্পর্ক নিয়ে পুনরায় ভাবতে হবে। এই সম্পর্কে যা যা কিছু বিদ্যমান বা চলমান প্রক্রিয়া কে পদে পদে প্রশ্ন করতে হবে। কারণ একবার যদি এই ফাঁদে ফেঁসে যান তাহলে যে মানসিক সংকটে আপনি পড়বেন তা থেকে আপনাকে উদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব। এই ধরণের প্রজাপতি তো ফুকে ফুলে উড়বে এবং মধু খাওয়া শেষে অবশেষে ভঙ্গবে আপনার মন কে। কোনো গানের কথা কি মনে পড়ে গেল?
হ্যাঁ, এরকম একটি গান আছে (গান: বালিকা তোমার প্রেমের পদ্ম দিওনা এমন জনকে… (শিল্পী: প্রীতম আহমেদ)।
প্রলোভন (Decoy)
‘প্রলোভন (Decoy)’ বুঝার জন্য জনপ্রিয় টেলিযোগাযোগ অপারেটর গ্রামীণফোনের দেওয়া কিছু প্যাকেজ বুঝলেই চলবে। বিশেষ করে এই কোম্পানির কিছু ব্যান্ডল প্যাকেজ বিষয়টিকে করবে আরো স্পষ্ট। সরাসরি ওদের ব্যান্ডল প্যাকেজের উদাহরণ না দিয়ে বুঝাত সুবিধার্থে একটি উদাহরণ টানছি।
ধরুন, আপনার ১ জিবি ডেটা দরকার গ্রামীণফোন থেকে। এখন গ্রামীণফোন বা জিপি আপনাকে ৩টি অপশন প্রদান করছে,
১. ১ জিবি ইন্টারনেট, মেয়াদ ৭ দিন, মাত্র ১০০ টাকা
২. ১ জিবি ইন্টারনেট, ২০ মিনিট টকটাইম, মেয়াদ ৭ দিন, মাত্র ১২০ টাকা
৩. ২ জিবি ইন্টারনেট, ৫০ মিনিট টকটাইম, মেয়াদ ১৫ দিন, মাত্র ১৫০ টাকা
এই ৩টি অপশন দেখে আপনি বেশ কনফিউজড হয়ে পড়েবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আপনি ৩ নম্বর অপশন বেছে নেবেন। কেন? কারণ ডেটা তো আপনার নিয়মিত প্রয়োজন হয় পাশাপাশি যদি টকটাইম পাওয়া যায় তাহলে খারাপ কি! আপনি তো ডেটার বাইরে সরাসরি ফোনকলেও কথা বলে থাকেন।
ফলে বিষয়টি কি দাঁড়াচ্ছে? ক্রয় করতে গেছিলেন ১ জিবি ডেটা হাতে ১০০ টাকা নিয়ে কিন্তু খেয়াল করে দেখলেন আর মাত্র ৫০ টাকা হলেই আপনি ড্যাবল ডেটা এবং এর পাশাপাশি ৫০ মিনিট টকটাইম এবং মেয়াদও বেশি পাচ্ছেন। এর ফলে এই অতিরিক্ত ৫০ টাকা আপনার কাছে অনেক নগণ্য মনে হবে এবং আপনি ৩ নম্বর অপশনটি সাবস্ক্রাইব করবেন।
প্রায় ৮০% শতাংশ ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন ঘটে জিপির কাস্টমারদের সাথে। আমরা মনে করি কোম্পানি আমাদের জন্য ‘Tailoring Package’ তৈরি করেছেন কিন্তু আদতে এটি একধরণের ‘প্রলোভন (Decoy)’। আমি সম্ভবত এই ম্যানিপুলেশনের খুব সহজ উদাহরণ দিয়েছি, আপনি যদি ‘My GP’ অ্যাপ্লিকেশনে প্রবেশ করেন তাহলে এরচেয়েও ভয়ানক সাইকোলজিকাল ম্যানিপুলেশন লক্ষ্য করবেন যা ভোক্তার অধিকারের খেলাপ এবং পকেট কাটার একটি ভালো মাধ্যম।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, তবে কি শুধু গ্রামীণফোন মানে কি “যত দোষ নন্দ ঘোষ!” না, এমন কমবেশি সবাই করছেন।
নিরব ঘাতক (Silent Treatment)
সবচেয়ে ঘাতক একটি টেকনিক হচ্ছে, চুপ থাকা। কথায় আছে, “Silence is Golden.” বিভিন্ন সম্পর্কে এটি প্রয়োগ করা যায়। আমি রোমান্টিক সম্পর্ক টানছি যাতে পাঠক মহল বিরুক্ত হয়ে না যান। আমার প্রবন্ধগুলোর স্কেল মাফিক নূন্যতম ১,০০০ শব্দ হয়ে যায়।
যাকগে, কাউকে যদি আপনি কনফিউজ করতে চান, শাস্তি দিতে চান, নিয়ন্ত্রণ করতে চান, আঘাত করতে চান তাহলে নীরব ঘাতক হতে হবে মানে সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট দিয়ে সোজা করতে পারবেন।
প্রথমত, মানুষ যখন চুপ থাকে তখন তিনি কি ‘Perception’ মনে নিয়ে বসে আছেন তা জানা প্রায় অসম্ভব। অন্তর্যামী আমরা কেউ নই। ফলে তার সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্তে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। অন্যদিকে যারা বেশি কথা বলেন তাদের জন্য এই প্রবাদ প্রযোজ্য, “Barking dog seldom bite.”।
এখন আপনার পার্টনার যদি লাভ বোম্বিং (Love Bombing) করে তারপর আপনার পার্টনার সাইলেন্ট ট্রিটমেন্টে চলে যান তাহলে ভাবুন তো, আপনার কি বেহাল অবস্থায় পড়বেন? আপনি হন্যি হয়ে তাকে খুঁজে বেড়াবেন। যেহেতু আপনি জানেন না যে আসলে কি হয়েছে? তাই নিজেকে অপরাধী বলে মনে হবে। তাই আপনি আপনার কি অন্যায় হয়েছে তার জন্য আপনি তার কাছে হাজারবার মাফ চাইবেন।
আপনি এখানে টার্গেট ফলে তীর যিনি ছুড়েছেন তিনি বেশ কিছু বিষয়ের অবতারণা করবেন,
১. দীর্ঘ সময় ধরে কোনরুপ কোনো যোগাযোগ আপনার সাথে রাখবেন না।
২. আপনি কি ভুল করেছেন সেজন্য তারা প্রয়োজনীয় ব্যখ্যা পর্যন্ত করবেন না। অত্যন্ত শান্ত এবং শত্রুভাবাপন্ন আচরণ করবেন আপনার সাথে।
৩. আবার তিনি যে কোনো বিষয়ে রাগান্বিত বা দুঃখিত সেটাও জানাবেন না। উল্টো উনি যে সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট টিক্সস ব্যবহার করছেন সেটাও অস্বীকার করবেন।
৪. আপনাকে অনুভব করাবে সমস্যা তো আসলে ‘আপনি’। এবং শুধু তাই নয়, আপনি যা করছেন তা কোনো অর্থ বহন করে না এবং এই সমস্ত কিছু আপনার কল্পনা প্রসূত ঘটনা। এমন কোনো কিছুই তিনি নিজে তো করছেন-ই না আপনি খামোখা শুধু টেনশন করছেন।
৫. সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট এর সর্বশেষ ধাপ হলো, আপনাকে দিয়ে সেটাই করানো যেটা তিনি চান। বিশেষ করে তিনি যা আপনার মধ্যে পছন্দ করেন না তার পরিবর্তন চাইবেন।
একদিক থেকে সবকিছুর-ই ইতিবাচক দিক আছে কিন্তু এসবের নেতিবাচক দিকগুলো ভয়াবহ। একজন মানুষের মানসিক অবস্থা পুরো বিগড়ে দেবার জন্য এসব টেকনিক যথেষ্ট। তবুও যতক্ষণ অবধি আপনি এসব টেকনিক আপনার সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যবহার করছেন বা কোনো ফাঁদ থেকে রেহাই পেতে চাচ্ছেন ততক্ষণ অবধি অন্তত আমার কাছে বিষয়গুলো ন্যায়সংগত।
এছাড়াও মনোবিজ্ঞান সংক্রান্ত আমার বিশেষ কোনো ডিগ্রি নাই। জরুরী নয়, এসবের সমস্ত কিছু আপনি এক নিঃশ্বাসে গলাধঃকরণ করবেন। এই ধরণের ফাঁদে পড়লে প্রয়োজনীয় ডাক্তার/সাইকিয়াট্রিস্ট এর সাহায্য নিন এবং ভালো থাকুন।
Discover more from অভিযাত্রী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.