- Advertisement -
- Advertisement -
মনোবিজ্ঞান

স্টকহোম সিনড্রোম (Stockhm Syndrome): মানসিক বন্ধনের অদ্ভুত প্রকাশ ও প্রভাব

- Advertisement -
- Advertisement -

স্টকহোম সিনড্রোম (Stockhm Syndrome)

Disclaimer: The information provided in this article regarding Stockholm Syndrome (স্টকহোম সিনড্রোম) is intended for educational and informational purposes only. It is not meant to substitute for professional psychological or medical advice. If you or someone you know is experiencing symptoms described in the article, it is important to seek help from qualified professionals. The examples and scenarios presented are for illustrative purposes and should not be interpreted as specific advice or recommendations. The author and publisher of this article disclaim any liability for any direct, indirect, incidental, or consequential damages or losses that may result from the use or misuse of the information contained within.

১৯৭৩ সালে একটি ব্যাংক ডাকাতি ঘটে স্টকহোম, সুইডেনে। এই ব্যাংক ডাকাতির সময় প্রায় ৬দিন কব্জায় রাখা হয় একাধিক বন্দীদের। মজার বিষয় হচ্ছে, এই ৬দিন পর এসব বন্দীদের কিছু জনের মধ্যে ঐ ডাকাতদের প্রতি এক ধরণের আগ্রহ ও সহানুভূতি জন্মায়। তারা মনে করতে শুরু করে পুলিশ তাদের জন্য ক্ষতিকর এবং ডাকাতদল তাদের জন্য ভালো চায়।

পরবর্তীতে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে নাম দেওয়া হয় ‘স্টকহোম সিনড্রোম (Stockhm Syndrome)’। আধুনিক যুগে মনোবিজ্ঞানের এই ট্রিক ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে একাধিক নাটক, সিনেমা ও সিরিজ। সর্বশেষ, মানি হেইস্ট সিরিজেও এই ট্রিক ব্যবহার করতে দেখা যায়। এই সিনড্রোম নিয়ে যখন আরো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয় তখন দেখা যায়, এটা শুধু ডাকাতদল আর তাদের জিম্মি করা মানুষদের মধ্যেই এটি সীমাবদ্ধ নয়। এর পরিধি বিশাল ও বিস্তৃত।

‘আপত্তিজনক বা খারাপ সম্পর্ক (Abusive Relationship)’-এও স্টকহোম সিনড্রোমের লক্ষণ পাওয়া গেছে। যেসব জুটি কীভাবে টিকে আছে বা কীভাবে তাদের রোমান্টিক সম্পর্ক বিদ্যমান আছে; তা নিয়ে আমাদের বিস্ময় থাকলেও হতে পারে সে সম্পর্কে কোন একজন স্টকহোম সিনড্রোমের মধ্যে পড়ে গেছেন। আবার সম্পর্ক যত দীর্ঘ হয় তত বেশি একে অন্যের সাথে ঘনিষ্ঠতা এবং এক ধরণের অভ্যেস (Attachment) তৈরি হতে বাধ্য।

সম্পর্কে কোন একজন (পুরুষ হওয়া জরুরী নয়) যদি তার পার্টনারকে মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিকভাবে বরাবর ঝামেলায় বা ক্ষতিতে রাখে আবার তারপরেও তার ঐ পার্টনার তাকে ছেড়ে যাচ্ছে না বরং তার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে উঠছে এবং বাহ্যিকভাবে যে নিয়ম-কানুন বা রীতি আছে সেসবের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য না হলে তা নিশ্চিতরুপে স্টকহোম সিনড্রোমের মধ্যে পড়বে। যদিও এটি মানসিক কোন ডিজওর্ডারের তালিকা ভুক্ত সমস্যা নয়, কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ানক হতে পারে।

- Advertisement -

স্টকহোম সিনড্রোম কিন্তু সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক ধরণের ট্রমা বন্ডিং। এক ধরণের মানসিক যুক্তি (যা মূলত কুযুক্তি) দিয়ে পার্টনার কে নিজের খারাপ/ভালো কাজ করানো এবং একই সাথে তাকে অনুভব করানো আমি তুমি ছাড়া অনেক অসহায়। এই ধরণের সম্পর্কে ছেলে বা মেয়ে যে কোন একজন সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। ঐ একজন সিদ্ধান্ত নেন সম্পর্ক পরবর্তীতে কোন দিকে মোড় নেবে, সম্পর্কে শারীরিক সম্পর্ক কেমন জঘন্য বা সুন্দর হবে, মানসিক সম্পর্কে আমি ছাড়া তুমি একা অনুভব করানো এবং একই সাথে নিজ পার্টনারের প্রতি এত অবিচারের পরেও তার মনে সহানুভূতির বীজ রোপণ করা।

ছেলেদের ক্ষেত্রে মোটাদাগে, গালি দেওয়া, অশ্লীল কথা বলা, মারপিট করা, খোটা দেওয়া, যৌতুকের জন্য চাপ দেওয়া, নিজের হতাশা বেডে নিয়ে যাওয়া। মেয়েদের ক্ষেত্রে শরীর স্পর্শ করতে না দেওয়া, পার্টনারের আয় নিয়ে খোটা দেওয়া, আয় না বুঝেই অযথা ব্যয় করে পার্টনারকে আর্থিকভাবে দূর্বল করা, মানসিকভাবে সারাক্ষণ ঝগড়া চালিয়ে যাওয়া, পুরো সম্পর্কে দুজনের মত না নিয়েই নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া এবং সর্বশেষ, “বিছানায় তো আমি তোমার সাথেই থাকি!” বলে বাকি আক্রান্ত সমস্যাকে ছোট করে দেখানো। এই সমস্ত একসাথে উপস্থিত থাকলে হতে পারে আপনি স্টকহোম সিনড্রোমে ভুগছেন।

এই ধরণের সম্পর্ক আপনাকে সামনে যেতে দেবে না। আপনার নিজের প্রতি নিজের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় জীবনের লক্ষ্য হারিয়ে ফেলতে পারেন। আপনার মধ্যে একইসাথে কিছু মিশ্র অনুভূতি কাজ করবে, হতাশা, ভয়, উদ্বেগ এবং একই সাথে নিয়ন্ত্রণকারী পার্টনারকে আদর্শ পার্টনার বলে মনে হতে শুরু করা। এই ধরণের পার্টনার শুধু সম্পর্কে নিয়ন্ত্রণ করে না, একইসাথে এরা ভয়ানক ‘স্বকামী (Narcissist)’ এবং সাইকো। আপনাকে মানসিক ভাবে ঠিক যে পরিমাণ ম্যানিপুলেশন করতে হয় এরা ঠিক সে পরিমাণ ম্যানিপুলেশন করতে দ্বিধাবোধ করবে না। ভিক্টিম সবসময় একধরণের ‘আত্ম দোষে (Guilt)’ এ ভুগবেন। মনে হবে এই সম্পর্কে যা যা সমস্যা সব আমার জন্যই হচ্ছে।

আপনি সচরাচর কিছু মানুষকে বলতে দেখবেন, “হ্যাঁ, ও একটু মন্দ স্বভাবের (ডাকাত হলেও সমস্যা নাই বা পরকীয়াতেও সমস্যা নাই), কিন্তু আমার চেয়ে বেশি ভালো কাউকে বাসে না।” কিছু পুরুষ (ভিন্নঅর্থে কাপুরুষ) স্ত্রীকে পেটানোর মধ্যে শান্তি পায় এবং সেটা গর্বের সাথে জাহির করে বেড়াই। কিছু স্ত্রী এমন মানসিক এবং আর্থিক ঝামেলায় তার স্বামী কে ফেলে দেয় শুধুমাত্র পাশের বাড়িকে নিজের গহনা বা অপ্রয়োজনীয় বস্তু সে ক্রয় করেছে সেটা দেখানোর জন্য।

আমার মনে হয় আমি খুবই লঘু মানের উদাহরণ দিলাম। আপনি যদি একটু খুঁজে নিয়ে দেখেন তাহলে এরচেয়েও বিশ্রী উদাহরণ হয়তো খুঁজে পেতে পারেন। এবং এই কথাগুলো বানোয়াট নয়, কিছু সময় হাতে মিললে নিজের চারপাশটা মিলিয়ে নিয়েন। এই ব্যাধির শেকড় সম্পর্কে আমাকেও জানান মন্তব্যের বক্সে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমার মনোবিজ্ঞান নিয়ে বিশেষ কোন ডিগ্রী নাই। আমি যেটুকু পড়াশোনা করি তা থেকেই কিছু লিখে থাকি। যে কোন সমস্যা যদি অতি তীব্র আকার ধারণ করে তাহলে একজন সাইকিয়াট্রিস্ট দেখান।

- Advertisement -
- Advertisement -

মেহেদি হাসান

পরিচয়: আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। আমি একজন বহুমুখী ব্যক্তি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমার পেশাগত জীবন বিস্তৃত। লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, অডিও ও ভিডিও সম্পাদক, ছবি সম্পাদক, ইউটিউবার এবং নাট্য পরিচালক হিসেবে কাজ করি। মাইক্রোসফটের একজন ডেভেলপার এবং অ্যাপ ডেভেলপারও আমি। More »

Related Articles

Leave a Reply

- Advertisement -
Back to top button