সহস্রাব্দের প্রজন্ম এমন একটি প্রজন্ম যাদের সঠিক লক্ষ্য এবং মনোযোগের বড় অভাব। তারা অনেক সময় বিভ্রান্তির কারণে সঠিক পথে থাকতে পারে না। তবে তাদের মধ্যে অনেকেই অত্যন্ত প্রতিভাবান এবং দ্রুত শিখতে সক্ষম।
“They are that sort due to distraction. But a number of them are highly talented and quick learners.”
শিক্ষকদের ভূমিকা
২১ শতাব্দীর শিক্ষকদের সহস্রাব্দের প্রজন্মের আচরণগত প্যাটার্ন বুঝতে হবে। কেননা তারা অনেক সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে এবং তাদের পরিকল্পনাগুলো অনেক অগোছালো। যার কারণে বেশির ভাগ সময় পথ ভ্রষ্ট হওয়ার সুযোগ থেকেই যায়।
শিক্ষকদের করণীয়
১. শিক্ষার প্যাটার্ন রিসার্চ: শিক্ষকদের এই প্রতিযোগিতামূলক এবং চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হলে সহস্রাব্দের যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের ‘Learning Pattern’ রিসার্চ করতে হবে। ২. আচরণগত প্যাটার্ন বোঝা: শিক্ষকদের সহস্রাব্দের প্রজন্মের আচরণগত প্যাটার্নও বুঝতে হবে। নয়তো শুধু ওদেরকে দোষারোপ করে শিক্ষকরা নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারবে না।
কেনাকাটার ধরণ
তাদের কেনাকাটার ধরণ অব্যবহিত পূর্বতন ‘জেনিয়াল (জন্ম ১৯৭৫- ৮৫)’ এবং তারও পূর্ববর্তী ‘জেনারেশন এক্স (১৯৬৫-৭৪)’ এর চেয়ে একেবারে পৃথক। তাঁরা জমি, গাড়ি, বাড়ি ফ্ল্যাট কিনেছেন হিসেব করে, বহু দিন ধরে। অর্থ সঞ্চয় করে আর যতটা সম্ভব ঋণের জালে না পড়ে।
মিলেনিয়ামদের ক্রয় প্রবণতা
কিন্তু মিলেনিয়ামদের কাছে যা ক্রয় করা হচ্ছে তার আকর্ষণটাই আসল। ক্রয়মূল্য, লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন। ভারতে ২০১৯ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী মিলেনিয়ামদের রোজগারের বড় অংশ ব্যয় হয় তাৎক্ষণিক চাহিদা মেটানোয়।
ব্যয়ের ধরন
১. সাজসজ্জা: সাজসজ্জা বাবদ ২১.৪ শতাংশ। ২. বিনোদন ও পানভোজন: বিনোদন ও পানভোজনে ৩২.৭ শতাংশ।
সহস্রাব্দের প্রজন্মের বৈশিষ্ট্য
সহস্রাব্দের প্রজন্মের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে আলাদা করে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো শিক্ষকদের এবং সমাজের অন্যান্য অংশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
১. প্রযুক্তি নির্ভরতা: সহস্রাব্দের প্রজন্ম প্রযুক্তির উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল। তারা ইন্টারনেট, স্মার্টফোন এবং সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে এবং যোগাযোগ রক্ষা করে। ২. দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ: এই প্রজন্ম দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম, তবে অনেক সময় তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে। ৩. সৃজনশীলতা: সহস্রাব্দের প্রজন্ম সৃজনশীল এবং নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করে। ৪. সামাজিক সচেতনতা: তারা সামাজিক এবং পরিবেশগত বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন এবং এই বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
সহস্রাব্দের প্রজন্মের চ্যালেঞ্জ
সহস্রাব্দের প্রজন্মের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে যা তাদের জীবনে প্রভাব ফেলে।
১. কর্মসংস্থান: বর্তমান যুগে কর্মসংস্থানের প্রতিযোগিতা অত্যন্ত বেশি। সহস্রাব্দের প্রজন্মকে এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে তাদের দক্ষতা উন্নত করতে হবে। ২. মানসিক চাপ: দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজে মানসিক চাপ একটি বড় সমস্যা। সহস্রাব্দের প্রজন্মকে মানসিক চাপ মোকাবিলা করতে শিখতে হবে। ৩. আর্থিক স্থিতিশীলতা: সহস্রাব্দের প্রজন্মের অনেকেই আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সমস্যায় ভুগে। তাদের সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
উপসংহার
সহস্রাব্দের প্রজন্ম একটি বিশেষ প্রজন্ম যারা প্রযুক্তি নির্ভর, সৃজনশীল এবং সামাজিকভাবে সচেতন। তবে তাদের কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে যা তাদের জীবনে প্রভাব ফেলে। শিক্ষকদের এবং সমাজের অন্যান্য অংশের উচিত তাদের এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে সাহায্য করা এবং তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করা।
Discover more from অভিযাত্রী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.