সম্পর্কের সাত রঙ

সম্পর্ক গড়ে তোলার ১১টি কার্যকরী উপায়

সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত করার কৌশল এবং ঝগড়া-বিবাদ মোকাবিলা

বিয়ে বা একসাথে থাকা যা-ই হোক না কেনো, দু’জন মানুষের মধ্যে সম্পর্ক হচ্ছে জীবনের তৃপ্তিদায়ক জিনিসগুলোর একটি। একটা সম্পর্ক কিভাবে গড়ে ওঠে তার কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই। তবে আমরা আজকে আপনাদের জানাবো কিভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয় দু’জনের মধ্যে।

১. ঝগড়া-বিবাদ ভয় পাবেন না

ঝগড়া-বিবাদ মোকাবিলা করা আসল কথা। সেটা সবাই পারে না। নিজের মত প্রকাশ করতে গেলেই কিছু মতপার্থক্য হতেই পারে। সম্পর্কের মধ্যে এক রকম সংঘাত খারাপ জিনিস তা সবসময় ভাবা ঠিক না। অনেক সময় দু’জনের মধ্যে ঝগড়া সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত করে তুলে। একঘেয়েমি জীবনের চেয়ে মাঝে মধ্যে ঝগড়া খুনসুটি করা ভালো। এতে ভালোবাসা বাড়ে।

২. নিজের স্বাতন্ত্র্যকে টিকিয়ে রাখতে হবে

একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তার মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলা সহজ কাজ। কিন্তু সে সম্পর্কেও থেকেও নিজের জন্য সময় বের করতে হবে। তার সাথে আপনার সঙ্গীকে পার্সোনাল স্পেস দিতে হবে। যেমন – আপনার নিজের শখ পূরণ করলে, পছন্দের জায়গায় একা ঘুরতে গেলেন তেমন আপনার সঙ্গীও তার শখ পূরণ করলেন, ঘুরতে গেলেন। এতে করে আলাদা সময় কাটানোর কারণে দু’জন দু’জনকে মিস করবেন। এতে করে দু’জনের সম্পর্ক মধুর হয়ে উঠবে।

৩. দু’জনে মিলে আনন্দ করুন

দু’জনে মিলে সময় কাটানো মানে আমরা মনে করি স্বামী-স্ত্রী এক বাসাতে থাকা। স্বামী কাজে যাবে, স্ত্রী রান্না করবে, ঘরের অন্যান্য কাজ করবে এটা বুঝি। দু’জনে মিলে আনন্দ করা মানে একসাথে সময় কাটানো, একে-অপরের সঙ্গ উপভোগ করা। তারপর উত্তেজনাপূর্ণ কিছু সময় পার করা, কিংবা বিছানায় অলস সকালে একসাথে সময় কাটানো। ব্যস্ত জীবনে সঙ্গীকে নিয়ে সপ্তাহে ছুটির দিনে বাইরে রেস্তোরাঁয় খেতে নিয়ে যাওয়া। এতে করে আপনার সাথে আপনার সঙ্গীর গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠবে।

৪. সুন্দর মুহূর্ত পালন করুন

সম্পর্ক ভালো করতে হলে আপনার সঙ্গীকে আপনি বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে উপহার দেবেন। সুন্দর জায়গাতে ঘুরতে নিয়ে যাবেন। এতে সম্পর্ক গভীর হবে।

৫. আপনার সঙ্গীর প্রিয় মানুষগুলোকে সম্মান করুন

আপনি আপনার সঙ্গীর প্রিয় মানুষগুলোকে ভালোবাসলে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়। যেমন স্ত্রী তার স্বামীর বাবা, মা, ভাই, বোনকে ভালোবাসলে তেমনি করে স্বামী স্ত্রীর বাবা, মা, ভাই, বোনকে ভালোবাসলে।

৬. নিজের দুশ্চিন্তা, ভয়গুলো শেয়ার করুন

আপনি যদি আপনার দুশ্চিন্তা, ভয় অন্যের সাথে শেয়ার করেন এবং সাহায্য চান তাহলে অপরজনও আপনার কাছে সাহায্য চাইবে। আপনার যদি শারীরিক, মানসিকভাবে দুর্বলতা গুলো শেয়ার করেন তাহলে আপনার সঙ্গী আপনাকে বুঝবে। সে অনুযায়ী আপনার সঙ্গী আপনাকে সাহায্য করবেন। দুশ্চিন্তা, ভয় দূর করবেন।

৭. বিপদে সঙ্গীর পাশে থাকা

এমন স্ত্রী আছেন যখন স্বামী অর্থ সম্পদ থাকে তখন স্বামীকে মাথায় করে রাখেন। আবার সে স্বামী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তখন সে স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে যেতে একবারও ভাবেন না। তবে সব স্ত্রী রা এমন হয় না। কিছু কিছু যে বিপদে পাশে থাকেন তারাই আসল সঙ্গী। আর বিপদে স্বামীদের চেনা যায় যখন স্ত্রীর কোনো বড় রোগ হয় সে সময়। কারণ ঐ সময় তারা বউয়ের পাশে থাকতে চায় না। স্বামীদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলব, কিছু কিছু স্বামী আছে ভালো।

৮. সঙ্গীর পাশে সব সময় স্মার্ট থাকুন

আপনার সঙ্গীর কাজে আপনার স্মার্টনেস দেখাবেন। স্মার্ট ছেলে মেয়ে সবাই পছন্দ করে। আপনি যদি আপনার সঙ্গীর সামনে সুন্দরভাবে থাকেন তাহলে আপনার সঙ্গী আপনার প্রতি ভালোবাসা গভীর হবে।

৯. সঙ্গীকে বিশ্বাস করা

স্বামী স্ত্রী দুজনে আলাদা পরিবেশে বড় হওয়া দুটি মানুষ। তাই এই দুই পরিবেশের মানুষ একসাথে থাকতে পারে বিশ্বাস নামক সেতু বন্ধনের মাধ্যমে। তাই সঙ্গীর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠার মাধ্যম হলো বিশ্বাস।

১০. শেয়ার করা

স্বামী-স্ত্রী মধ্যে কাজগুলো শেয়ার করা উচিত। যেমন, আমাদের সমাজে বলে ঘরের কাজ মেয়েদের আর বাহিরের কাজ পুরুষদের এটা ভুল ধারণা। ঘরের কাজে স্বামীরা বউকে সাহায্য করলে বরং দুজনের মধ্যে মহব্বত বাড়ে।

১১. দায়িত্ব ভাগাভাগি করা

সংসারে দু’জনে চাকরি করলে একজনের উপর চাপ কমে। ফলে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়। এতে করে সম্পর্ক ভালো থাকে।

FAQs

প্রশ্ন: সম্পর্ক ভালো রাখতে কী কী করা উচিত? উত্তর: সম্পর্ক ভালো রাখতে ঝগড়া-বিবাদ মোকাবিলা করা, নিজের স্বাতন্ত্র্য টিকিয়ে রাখা, দু’জনে মিলে আনন্দ করা, সুন্দর মুহূর্ত পালন করা, সঙ্গীর প্রিয় মানুষগুলোকে সম্মান করা, দুশ্চিন্তা ও ভয় শেয়ার করা, বিপদে সঙ্গীর পাশে থাকা, স্মার্ট থাকা, সঙ্গীকে বিশ্বাস করা, কাজ শেয়ার করা এবং দায়িত্ব ভাগাভাগি করা উচিত।

প্রশ্ন: সম্পর্কের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ কি খারাপ? উত্তর: না, সম্পর্কের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ সবসময় খারাপ নয়। মাঝে মাঝে ঝগড়া সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত করে এবং ভালোবাসা বাড়ায়।

প্রশ্ন: সম্পর্কের মধ্যে বিশ্বাসের গুরুত্ব কী? উত্তর: সম্পর্কের মধ্যে বিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত করে এবং সুসম্পর্ক গড়ে তোলে।

সেলিনা জামান

Hello! I'm Selina Zaman, a passionate content writer for Ovizatri, an online news and magazine portal. I enjoy exploring and writing about a wide range of topics. Currently, I reside in the UK. If you have any questions, feel free to reach out via the email provided in my profile.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button