সম্পাদকীয়

অসহিষ্ণুতা ও দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি: বর্তমান পরিস্থিতি ও আমাদের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিশ্লেষণ

আজকাল বিভিন্ন টকশোতে শুনবেন, “ ‘Intolerance’ খুব বেড়ে যাচ্ছে।” এর বাংলা হচ্ছে, “আমরা অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছি।” এখন এই সমস্ত টকশোতে পুনরায় লক্ষ্য করবেন যে, কার সম্পর্কে এই বাক্যটি বলা হচ্ছে? কোন কমিউনিটি/দল কে উল্লেখ করা হচ্ছে? তার সুনির্দিষ্ট কোন নাম নেওয়া হচ্ছে না। কেন নেওয়া হচ্ছে না? কার জন্য আমাদের মিডিয়া পাড়ার মাতব্বরেরাও ভয় পাচ্ছেন?

আচ্ছা, দ্রব্যমূল্যের দাম কি সত্যিই বেড়েছে? বাড়লে কত বেড়েছে? বিশ্বাস করুন, পারতপক্ষে কেউ আপনাকে এই প্রশ্নের উত্তর দেবে না। এমনকি বর্তমান সব জিনিসপত্রের যা দাম তার যদি দিগুণও হয়ে যায় তবুও মুখ ফুটে অদৌ কেউ কিছু বলবেন বলে আমার তো মনে হয় না।

কেন এমন মনে হচ্ছে, বলতে গেলে কপালে কালো দাগ পড়তে পারে! অথবা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেবার পরেরদিন -ই তার পাল্টা যুক্তি হিসেবে পাকিস্তানের দ্রব্যমূল্যের কি দাম চলছে তার উদাহরণ দেখানো হলেও হতে পারে।

কর্মসংস্থান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি একটি বিবৃতি দিলেও দিতে পারতেন। উক্ত বিবৃতির উপরে লেখা থাকতো, “দর্শন শিখতে হলে পেট ভরা থাকা জরুরী (জনপ্রিয় প্রবাদ)।” কিন্তু ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ নিয়ে এত পরিষ্কার ও ঝকঝকে বিবৃতিতে কেউ কেউ তো বিব্রতও হতে পারেন।

দুটো পয়সা যে লিখে আয় করছে ওতেও যে এক ধরণের ‘ইথিক্স’ থাকে, ওটাও যে এক ধরণের ব্যবসা এবং এক ধরণের ধর্মও বটে তা বেমালুম ভুলে গেলে তো আর চলে না। সেখানেও কড়া শাসনে প্রেস ফ্রিডম অব স্পিচ ইনডেক্সে ১৬২ তম অবস্থানে ১৮০টি দেশের মধ্যে (সূত্র: RSF); আরো টেনে নিচে না নামালে আমরা জাতে উঠতে পারি না।

আমার মত যারা ঘুম প্রিয়, শান্তিপ্রিয়, আরামপ্রিয় এবং বিছানা ছাড়তে প্রায় অবাধ্য তাদের চিন্তার কিছু নেই। কারণ, তাঁদের তো আর বাজারে যেতে হচ্ছে না। অথবা, মোটা মানিব্যাগে মোটা পেট যতদিন সামনের রাস্তা ধরেছে ততদিন ঘুমিয়ে থাকলেও কি বা আসে যায়। আর তো ক’টা দিন! জীবন আর কতবড় এত এত কমপ্লেন করে কমপ্লেন গার্ল/বয় হবার খুব বেশি তাড়াহুড়ো না করলেও তো চলে।

যারা মাঠে আছেন, ঘাটে আছেন, রাস্তায় থাকেন… তাদের কে দু’চারটে ধমক দিলেই তো চুপ হয়ে যায়। ওরা তো আর নীতি নির্ধারণ করে না, ওদের মধ্যে নতুন নতুন আইন বা অনুভূতির বালাই নেই। কিন্তু ওদের পেটে যে ধাক্কা দেওয়া অত্যন্ত সহজ এই সুযোগে সেটা অভিজাত রা জেনে গেছে।

ঠিক যেমন টি জনপ্রিয় নাট্যকার ‘শ্রেনী বৈষম্য’ এর বিরুদ্ধে নাট্যদল গঠন করে কোন এক (রাষ্ট্রের দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক) হিরো কে ব্যক্তি আক্রমণ করেন। ঠিক যেমন করে অল্প আয়ের মা ওপারে গিয়ে হয়তো ভাবছেন তার ছেলেটা পড়াশোনা চালিয়ে যাবে কি করে? তার দায়িত্ব কে নেবে?

তাই বলি কি, আপনারা এখনো ‘অসহিষ্ণু’ হয়ে পড়েন নি। এই পরিমাণ সহনশীলতা যদি কবরের রাস্তাও দেখায়, তবুও রমজান মাসে ব্যবসায়ীদের গালি না দিয়ে আরাম করে নিঃসন্দেহে ঘুমিয়ে যাওয়া যেতে পারে।

মেহেদি হাসান (বিকেল)

I'm MD Mehedi Hasan, also known by my pen name Mr. Bikel. I'm the admin of the site Ovizatri - News & Magazine. I am a versatile individual with a professional life that spans various fields. I work as a writer, actor, social worker, radio jockey, web developer, web designer, editor, presenter, blood donor, audio and video editor, photo editor, YouTuber, and drama director. I am also a developer and app developer at Microsoft.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button