অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি: একটি গভীর মানসিক সমস্যা
লক্ষণ, কারণ, ঝুঁকি এবং চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণ
Disclaimer
The information provided in this article is intended for educational and informational purposes only. It is not a substitute for professional medical advice, diagnosis, or treatment. Always seek the advice of your physician or other qualified health provider with any questions you may have regarding a medical condition. Never disregard professional medical advice or delay in seeking it because of something you have read in this article.
The content discussed here is based on general knowledge and research on antisocial personality disorder and related mental health issues. While every effort has been made to ensure the accuracy of the information, the author and publisher make no representations or warranties of any kind, express or implied, about the completeness, accuracy, reliability, suitability, or availability with respect to the article or the information contained within it for any purpose. Any reliance you place on such information is therefore strictly at your own risk.
In no event will the author or publisher be liable for any loss or damage including without limitation, indirect or consequential loss or damage, or any loss or damage whatsoever arising from loss of data or profits arising out of, or in connection with, the use of this article.
If you suspect you or someone you know may have antisocial personality disorder or any other mental health condition, it is important to seek professional help immediately. This article does not endorse or recommend any specific tests, physicians, products, procedures, opinions, or other information that may be mentioned within. Reliance on any information provided in this article is solely at your own risk.
মানসিক রোগগুলোর মধ্যে ব্যক্তিত্বের ব্যাধি বেশ গুরুতর একটি সমস্যা। যা আমরা এর আগে একটি অনুচ্ছেদে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু এই ব্যক্তিত্বের ব্যাধি কোনো ক্ষুদ্র সমস্যা নয়, এর পরিসর বেশ বড়। ব্যক্তিত্বের ব্যাধির প্রকারভেদগুলোও একেকটি জটিল সমস্যা। এর মধ্যে রয়েছে অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি। আমাদের আজকের বিষয় অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি।
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি কি?
আমরা সাধারণত সেই ব্যক্তিকে অসামাজিক বলে থাকি যাদের অন্যের সাথে কথা বা সম্পর্ক তৈরি করতে সমস্যা হয় অথবা এসব করতে যারা আগ্রহী হয় না। কিন্তু মনোবিজ্ঞানে ‘অসামাজিক’ শব্দটি দ্বারা এমন অর্থ বোঝায় না। মনোবিজ্ঞানে অসামাজিক বলতে এমন একটি মানসিক রোগকে বোঝায় যা অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি হিসাবে পরিচিত। আর এটি সাধারণত কৈশোরে অর্থাৎ ১৫ বছর বয়সের আগে দেখা যায়।
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধিকে কখনও কখনও সোসিওপ্যাথিও বলা হয়। অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যদের প্রতি বিদ্বেষ, কারসাজি বা কঠোর আচরণ ইত্যাদি বিষয়গুলো দেখা যায়। তাদের এমন আচরণের জন্য কখনো তাদের অপরাধবোধ বা অনুশোচনাবোধ হয় না।
এই অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধিযুক্ত ব্যক্তিরা সামাজিক আইন মানতে চায় না। তারা প্রায়শই আইন লঙ্ঘন করে থাকে এবং অপরাধী হয়ে ওঠে। তারা অনবরত মিথ্যা বলতে পারে। তাদের আচরণে হিংসা বা আবেগপ্রবণতা প্রকাশ পায়। ড্রাগ এবং অ্যালকোহলের ব্যবহারও হতে পারে। এই ধরনের বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য এই ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব পালনেও পিছুপা হয়।
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধির লক্ষণ
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:
১. সঠিক ও ভুলের প্রতি অবজ্ঞা করা। ২. অন্যদের শোষণ করার জন্য অবিরাম মিথ্যা বা প্রতারণার আশ্রয় নেয়া। ৩. নির্মম, নিষ্ঠুর এবং অন্যদের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ করা। ৪. ব্যক্তিগত প্রশান্তির জন্য অন্যদের ক্ষতি করতে বিভিন্ন ধরনের বুদ্ধি ব্যবহার করা। ৫. অহংকারবোধ, শ্রেষ্ঠত্বের অনুভূতি এবং অত্যন্ত মতামতপূর্ণ আচরণ করা। ৬. বারবার অপরাধমূলক আচরণ করা এবং আইনের সাথে সমস্যা সৃষ্টি করা। ৭. বিভিন্নভাবে ভীতি প্রদর্শন এবং অসৎ উপায়ের মাধ্যমে অন্যের অধিকার লঙ্ঘন করা। ৮. আবেগপ্রবণতা বা সামনের পরিকল্পনা করতে ব্যর্থতা। ৯. মানুষের সাথে শত্রুতা, বিরক্তি, আন্দোলন, আগ্রাসন বা সহিংস আচরণ করা। ১০. জীবের প্রতি সহানুভূতির অভাব এবং অন্যদের ক্ষতি করার জন্য অনুশোচনাবোধ হয় না। ১১. সবসময় অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি বা বিপজ্জনক আচরণ করা। ১২. বিভিন্ন কাজে দায়িত্বজ্ঞানহীন হওয়া।
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে গুরুতর এবং ক্রমাগত আচরণের সমস্যাগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকে:
- মানুষ এবং পশুদের প্রতি কঠোর হওয়া।
- সম্পত্তি ধ্বংস করা।
- ছলনা করা।
- চুরি করা।
- নিয়মের গুরুতর লঙ্ঘন করা।
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধির কারণ
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধির সঠিক কারণ সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে কিছু বিষয়কে এই ব্যাধির কারণ হিসেবে ধরে নেয়া হয়।
জিনগত কারণ
জিনগত কারণে এই ব্যাধি হতে পারে বলে মনে করা হয়।
পরিবেশগত কারণ
পরিবেশগত কারণেও এটি হতে পারে। পরিবেশের নানা বিশৃঙ্খলা বা বিভিন্ন সমস্যা থেকে আস্তে আস্তে এই সমস্যা তৈরি হতে পারে।
কোন কোন ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি থাকে বেশি?
কিছু কিছু কারণে অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি বিকাশের ঝুঁকি বেশি থাকে বলে মনে করা হয়।
১. মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধির পারিবারিক ইতিহাস থেকে এই সমস্যার ঝুঁকি বেশি থাকে। ২. শৈশবকালের অপব্যবহার বা অবহেলার শিকার হতেও এই সমস্যা সৃষ্টির ঝুঁকি বেশি থাকে। ৩. শৈশবকালে অস্থির, হিংসাত্মক বা বিশৃঙ্খল পারিবারিক জীবন থেকেও এটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ৪. নারীদের তুলনায় পুরুষদের অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধির জটিলতা
কিছু কিছু কারণে অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধির জটিলতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
১. স্ত্রীর প্রতি অসম্মানজনক আচরণ বা শিশু নির্যাতন অথবা অবহেলা থেকে এই সমস্যার জটিলতা বৃদ্ধি পেতে পারে। ২. অ্যালকোহল বা মাদক পদার্থ ব্যবহারের সাথে এই সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। ৩. জেলে বা কারাগারে থাকার ফলেও এর জটিলতা বৃদ্ধি পেতে পারে। ৪. নরহত্যা বা আত্মঘাতী আচরণের ফলেও হতে পারে। ৫. বিষণ্ণতা বা উদ্বেগের মতো অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধির জন্যও এটি হতে পারে। ৬. নিম্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার ফলেও এর জটিলতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
চিকিৎসা
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি বিকাশ থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন নিশ্চিত উপায় নেই। এর মূল কারণ হিসেবে মনে করা হয় যে, শৈশব থেকেই এই সমস্যার সৃষ্টি। তাই এটি কেবলমাত্র পিতামাতা, শিক্ষক এবং শিশু বিশেষজ্ঞরাই প্রাথমিক সতর্কতার মাধ্যমে এর লক্ষণগুলি সনাক্ত করতে সক্ষম হতে পারে।
অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিজেরাই নিজেদের সাহায্য করার সম্ভাবনা কম থাকে। যদি আপনার কোনো কাছের মানুষের বা বন্ধুদের আচরণের মধ্যে এমন দেখেন বা সন্দেহ হয় যে তাদের কারো এই ব্যাধি থাকতে আছে তাহলে আপনার তাকে খুব যত্নসহকারে পরামর্শ দিতে পারেন। এবং তাকে একজন মানসিক বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে সাহায্য করতে পারেন।
উপসংহার
এই অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধির কোনো সঠিক চিকিৎসা না থাকলেও কিছু ব্যক্তির মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণগুলি যেমন ধ্বংসাত্মক এবং অপরাধমূলক আচরণ ইত্যাদির সময়ের সাথে সাথে হ্রাস পেতে পারে। তবে এর জন্য কোনো চিকিৎসা নাকি বার্ধক্যের ফলে অথবা অসামাজিক আচরণের পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে এই সমস্যা হ্রাস পেয়েছে এটা স্পষ্ট বোঝা যায় না।
আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ
ছবি: Image by wirestock on Freepik
Discover more from অভিযাত্রী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.