স্বাস্থ্য

জরায়ু মুখের ক্যান্সার: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ

মৃত্যুর দ্বারে ঠেলে দিচ্ছে জরায়ু মুখের ক্যান্সার

- Advertisement -

Disclaimer: The information provided in this article is for informational purposes only and is not intended as a substitute for professional medical advice, diagnosis, or treatment. Always seek the advice of your physician or other qualified health provider with any questions you may have regarding a medical condition. The content of this article is based on general knowledge and may not reflect the most recent developments in the field. The author and the platform do not endorse or promote any specific medical treatment, and readers are encouraged to consult their healthcare professionals for personalized advice. The author and the platform shall not be held responsible for any action taken by readers based on the information provided in this article. Additionally, the article’s content is in Bengali, and readers are advised to seek translation or clarification if needed.

আমরা জানি বর্তমান বাংলাদেশ বিভিন্ন ধরনের রোগের জর্জরিত।এসব রোগের মধ্যে অনেক রোগ আছে যেগুলো সংক্রামক আবার কিছু রোগ আছে সংক্রামক নয়। আজকে আমরা আলোচনা করব এমন একটি রোগ নিয়ে যেটা কিনা ভবিষ্যৎ নারীদের জন্য এক হুমকির নাম। আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় ‘জরায়ু মুখের ক্যান্সার’। বর্তমানে যার প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এটি আমাদের বাংলাদেশের সামাজিক দিক দিয়ে খুবই একটি সংবেদনশীল রোগ। যেটা নিয়ে না আমরা আলোচনা করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি না। আমরা এর ব্যাপারে ব্যাপক ভাবে জানি। একজন নারী প্রথমে আমাদের মা, আমাদের বোন, আমাদের স্ত্রী। তাদের সুরক্ষার কথা আমাদের সবসময় ভাবা উচিত। কিন্তু আমরা এই ব্যাপারে কেউই কথা বলতে চাই না। লজ্জার কারনে অনেকে নিরবে দিন দিন এই রোগের শিকার হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রতিদিন গড়ে ২৮ জন নারী মারা যাচ্ছে এই রোগে। এটি প্রথমে একটি টিউমার আকারে দেখা দেয় তারপর আস্তে আস্তে এটি ক্যান্সারের রূপ নেয়। এই ক্যান্সারে যে ভাইরাস কাজ করে তা হল হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ঘাতক ভাইরাস। সংক্রমণ হওয়ার পর জরায়ু মুখে ক্যান্সার হতে প্রায় ১০ থেকে ২০ বছর সময় লেগে যেতে পারে কিন্তু এই ভাইরাসে আক্রমণ হওয়ার পর এটা নিশ্চিত যে আক্রান্ত ব্যক্তি একদিন না একদিন এই জরায়ু মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি জরিপ দেখলে দেখা যায় বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৫ লাখ ৭০ হাজার নারী এই জরায়ু মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রায় তিন লাখ দশ হাজার নারী এর ফলে মারা যান। জরায় মুখ ক্যান্সারে বাংলাদেশের ১৫ থেকে ৪৫ বছরের নারীদের মধ্যে দ্বিতীয় প্রধান ক্যান্সার।  যেখানে  বছরের নতুন আক্রান্ত ১৭৬৮৬ এবং প্রায় তিন লাখ দশ হাজার নারী এর ফলে মারা যান। বর্তমানে পাঁচ কোটিরও বেশি বাংলাদেশি নারী এই জরায়ু মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

- Advertisement -

যৌন সংস্পর্শে এই রোগ ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম। শতকরা ৮০ ভাগ নারী তাদের জীবনে এইচপি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হন। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ এই কারণে এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে ১০ থেকে ২০ বছর সময় লেগে যায় বলে আমরা এর পরবর্তী কুফল এবং ভয়াবহতা সম্পর্কে সঠিক সময়ে জানতে পারি না। প্রতিটি যৌন সক্রিয় নারী এই ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়াও  এক পুরুষ যদি একাধিক নারীর সাথে মিলন ঘটায় তবে আক্রান্ত নারী থেকে সুস্থ নারীতে এই ভাইরাসটি খুব সহজেই ছড়িয়ে যেতে পারে।

সাধারণত জরায়ু মুখ ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে জরায়ু অপারেশন করে কেটে ফেলা হয়। ফলে একজন নারী মা হওয়ার ক্ষমতা হারাতে পারেন। যদি এই রোগ বেশি ছড়িয়ে পড়ে তাহলে কেমোথেরাপি রেডিও থেরাপি দেয়া হয় যেগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা। তাহলে এখন প্রশ্ন আসবে এই রোগ প্রতিকার করা বা প্রতিরোধ করার উপায় কি?

আমরা যদি সঠিক সময়ে এই রোগটি প্রতিরোধ করার জন্য সঠিক পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করি তাহলে আমাদের জরায়ু ক্যান্সার অনেক অংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। বর্তমানে বাজারে এই এইচপিভি অর্থাৎ হিউম্যান প্যাপিলামো ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ‘এইচপিভি’ ভ্যাকসিন বাজারে চলে এসেছে যেগুলোর পরিপূর্ণ ব্যবহার আমাদের এই রোগ থেকে দূরে রাখতে পারে। আমরা কখনোই চাই না আমাদের মা বোনেরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে তাদের মাতৃত্ব হারাক কারণ এই রোগের চিকিৎসা একমাত্র জরায়ু কেটে ফেলা।

এবং কেমোথেরাপির এর মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা দেওয়া কিন্তু সেই চিকিৎসার পরেও রোগী সুস্থ ভাবে তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে বলে গ্যারান্টি দেওয়া অসম্ভব। তো পনেরো বছর পর  যদি সবাইকে এই ভ্যাকসিনের আওতায় আনা যায় তবে আমরা এই রোগ থেকে অতি দ্রুত মুক্তি পেতে পারি এবং ভবিষ্যতে একটি নিশ্চয়তা পেতে পারি এই রোগ আমাদের আক্রান্ত করতে পারবে না বলে। এছাড়া নিয়মিত ভায়া, প্যাপ্সে, এইচপিভি টেস্টে অংশ নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত চেক করতে পারি, যে আমরা এই ভাইরাসের আক্রান্ত কিনা।

  • বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে হবে।

    - Advertisement -
  • ধূমপান বর্জন করতে হবে।

  • স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করতে হবে।

তো আমরা উপরোক্ত পর্যালোচনার মাধ্যমে বুঝতে পারি বর্তমানে এই জরায়ু মুখ ক্যান্সার আমাদের সমাজে আমাদের দেশে একটি বড় ধরনের হুমকি হিসেবে রূপ নিয়েছে যার থেকে বাঁচতে হলে আমাদের একটি সুস্থ সুন্দর স্বাস্থ্যকর  জীবন যাপন করতে হবে।

এছাড়াও আমাদের নারী সমাজকে তাদের এই ব্যাপারে  জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। তবেই আমরা এই বিরাট শান্তি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হবো।

ছবি: Image by Lifestylememory on Freepik

- Advertisement -

- Advertisement -
- Advertisement -

চন্দ্রকান্ত সেন

ছাত্র, জ্ঞান আহরোণের প্রয়াসে আছি। অধ্যায়নরত আছি-নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারি কলেজ, যশোর (২য় বর্ষ)। জেলা: নড়াইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- Advertisement -
Back to top button