স্বাস্থ্য

কিডনি রোগ: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

কিডনি রোগ থেকে বাঁচার উপায় এবং প্রয়োজনীয় ঔষধ

কিডনি আমাদের শরীরে প্রধান রেচন অঙ্গ। যা আমাদের শরীর থেকে ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ রক্ত থেকে নিষ্কাশন করে, মূত্র তৈরি করে দেহ থেকে বের করে দেয়। নানান কারণে কিডনি নষ্ট হতে পারে। এটি নিরব ঘাতক। কিডনির ৭০/৮০ শতাংশ নষ্ট করে ফেলে কোনোরুপ লক্ষণ না দেখিয়েই।

কিডনি রোগের লক্ষণ সমূহ

বিভিন্ন সময় কিডনির কোন লক্ষণ ছাড়াই নষ্ট হতে পারে বা ৬০ শতাংশর বেশি নষ্ট হওয়ার পর লক্ষণ প্রকাশ করে। যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায় সেগুলো হলো:

১. প্রসাবের সল্পতা দেখা দেয় (২ লিটার এর কম প্রসাব নিষ্কাশন কে প্রসাবের সল্পতা বলা হয়)।

২. কিডনি রোগের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে শরীর অনেকাংশে ফুলে যাওয়া, বিশেষ করে মুখমন্ডল।

৩. প্রস্রাব যদি লাল হয় বা রক্ত যায়।

৪. কোমরের দুই পাশে যদি ব্যথা অনুভূত হয়। এবং এই ব্যথা তলপেটেও হতে পারে।

৫. উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিলে।

৬. শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দেওয়া।

৭. এবং কাজে ক্লান্তি ভাব দেখা দেওয়া।

৮. ক্ষুধামন্দা।

৯. ওজন হ্রাস পাওয়া।

১০. বমি বমি ভাব হওয়া।

 

কিডনি রোগ কেনো হয়?

১. ডায়েবেটিস কিডনি রোগের প্রধান কারণ।

২. এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের কারণ।

৩. কিডনিতে পাথরসহ আরও অনেক কারণে কিডনি রোগ হয়।

৪. নিয়মিত পরিশ্রম বা অতিরিক্ত বিশ্রাম ও ব্যায়াম না করা নানান রোগের ন্যায় কিডনির সমস্যা ও সৃষ্টি করে।

৫. পরিমিত পানি পান না করা।

৬. ধূমপান করা হতে পারে এ রোগের বিশাল কারণ।

৭. জেনেটিক কারণেও কিডনি রোগ হয়ে থাকে।

৮. কিডনি তে পাথর ও প্রসাব আটকে রাখা।

৯. অতিরিক্ত ওজন ও হতে পারে কিডনি রোগের কারণ।

১০. কিডনি রোগের জন্য ক্ষতিকর ঔষধ সেবন করা কিডনি কে খুব দ্রুত নষ্ট করতে পারে।

 

কিডনি রোগ থেকে বাঁচার উপায় সমূহ

১. অতিরিক্ত খাবার লবণ খাওয়া যাবে না। আমরা খাবারে বা তরকারিতে অতিরিক্ত লবণ খাবো না অতিরিক্ত লবণ কিডনি নষ্ট করতে পারে।

২. উচ্চ রক্তচাপ ছোট থেকেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে অনেকের ভুল ধারণা আছে যে প্রেসারের ওষুধ খেলে কিডনি ড্যামেজ হয় বা নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু আসলে তা না। প্রেসার সব সময় স্বাভাবিক রাখতে হবে। কিডনি রোগের অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ।

৩. পরিমিত পানি পান করতে হবে।তবে অতিরিক্ত পানি পান করার কোন প্রয়োজন নেই। শুষ্ক বা রৌদ্র অবস্থাতে যারা কাজ করেন তাদের জন্য ৩ লিটার। যারা ছায়াযুক্ত অবস্থাতে কাজ করেন বা যাদের ঘাম কম হয় তাদের জন্য আড়াই লিটার পানি পান করলেই যথেষ্ট।

৪. ভিটামিন সি জাতীয় খাবার পরিমিত খাওয়া।

(ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন আমলকি, কামরাঙ্গা, মাছের তেল, ভিটামিন সি এর ক্যাপসুল। বিশেষ করে Star Fruits/কামরাঙ্গা। পানিশূন্য অবস্থায় কেউ যদি একটি কামরাঙ্গা সম্পূর্ণ খায় সে ক্ষেত্রে তার কিডনি সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান করার পর ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।)

৫. কারো যদি কিডনির একটুও সমস্যা থাকে এবং সে যদি ব্যাথা নাশক ঔষধ খেয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে সেদিনই তার কিডনি অকেজো হয়ে যেতে পারে। ব্যাথা নাশক ঔষধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
যেমন, NSID বা Voltaline জাতিয় ঔষধ।

৬. ধূমপান ও নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকতে হবে।

৭. কিডনিতে পাথর হলে যত দ্রুত সম্ভব (USWL) বা স্টোন ক্রাশ করে নিন, অন্যথায় কিডনি অকেজো বা বিকল হয়ে যেতে পারে।

৮. পরিমিত ব্যায়াম কিডনি রোগ থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করে।

তথ্যসূত্র:ডঃ সোহরাব হোসেন সৌরভ (নিউরোলজিস্ট)

কিডনি রোগে যেসব সবজি খাবেন

  • চিচিঙ্গা, লাউ, করলা, বিচি ছাড়া শশা, সজনা, ডাঁটাশাক, লালশাক, কচুশাক, ঝিংগা, পেঁপে, হেলেঞ্চা, বাঁধাকপি, পালংশাক, কচু, মূলা, পুঁইশাক, ঢেঁড়স, গাজর, কাঁঠালের বিচি, শিমের বিচি।

কিডনি রোগে কি কি ঔষধ খাবেন

  • Iron
  • Ramipril
  • Losartan
  • Furosemide
  • Erythropoietin
  • Calcium Acetate
  • Amlodipine
  • Alfacalcidol

শামিম হাসান

I am currently a second-year student at the Nursing & Midwifery College in Jashore, where I am dedicated to advancing my knowledge and skills in healthcare. Alongside my studies, I work in Clinical Practice, gaining invaluable hands-on experience. I also contribute to Ovizatri, a news and magazine website, where I write insightful articles on health issues. Feel free to reach out to me with any health-related questions via the email provided in my profile.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button