মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানোর সহজ উপায়
ব্যায়াম, খাদ্য, ধ্যান এবং আরো অনেক কিছু দিয়ে মস্তিষ্ককে শক্তিশালী করুন
Disclaimer: The information provided in this article is intended for general informational purposes only. The views expressed in the article are the opinions of the author and do not necessarily reflect the official policy or position of the website, its editors, or any affiliated organizations.
The use of Google AdSense for revenue generation is subject to the policies and guidelines set forth by Google. While the author has made efforts to ensure compliance with these policies at the time of writing, it is important to note that Google AdSense policies are subject to change. The author and the website make no representations or warranties of any kind, express or implied, about the completeness, accuracy, reliability, suitability, or availability with respect to the article or the information contained therein.
Readers are advised to carefully review Google AdSense policies independently and take necessary precautions to ensure ongoing compliance. The author and the website shall not be responsible for any adverse consequences, including but not limited to, the suspension or termination of Google AdSense accounts, resulting from failure to adhere to the latest policies or any changes made by Google.
The article is not a substitute for professional advice. Readers are encouraged to seek the advice of qualified professionals or experts regarding their individual circumstances. The author and the website disclaim any liability for any reliance placed on the information provided in the article. Readers use the information in the article at their own risk.
একটা সময় আমরা জানতাম বয়সের সাথে সাথে মানুষের ব্রেইনের কার্যকারিতা কমে যায়। মস্তিষ্কের কোষগুলো মরতে থাকে, কমতে থাকে কিন্তু আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে বিষয়টা তা নয়। আমরা যতোটা ভাবি মস্তিষ্ক তার চাইতে বেশি নমনীয় এবং অনেক বেশি পরিবর্তনশীল।
কম্পিউটারের মাদারবোর্ডে অনেক ধরনের হিজিবিজি সার্কিট থাকে। এই সার্কিটগুলো যে প্রক্রিয়ায় কাজ করে তাকে ওয়ারিং বলে। আমাদের ব্রেইনের ভিতরে এধরণের স্নায়ুকোষের ওয়ারিং থাকে। পূর্বে মনে করা হতো এধরনের ওয়ারিংগুলো পরিবর্তনশীল নয় কিন্তু আধুনিক গবেষণায় এটা প্রমাণ হয়েছে যে ওয়ারিংগুলো পরিবর্তনশীল এবং সময়ের সাথে সাথে স্নায়ুকোষের মধ্যে নতুন নতুন সংযোগ স্থাপন সম্ভব।
অমরচন্দ্র নামক একজন নিউরো সাইন্টিস্ট তার টম নামে একজন রোগীকে পান যার হাতের আংগুলগুলো হারিয়েছে, গবেষণায় দেখা গেলো সেই রোগীটির মুখমণ্ডল স্পর্শ করলে সে তার হাতের আংগুলের স্পর্শ অনুভব করে। এটা কীভাবে হলো?
এটার ব্যাখ্যা করলেন এভাবে যে, মস্তিষ্কে মুখমণ্ডলের জায়গাটা এবং আঙ্গুলের জায়গাগুলো খুব কাছাকাছি। যখন সে আঙ্গুল হারিয়েছে তখন মস্তিষ্কে মুখমণ্ডলের জায়গাটা নতুন ওয়ারিং সৃষ্টি করেছে সেই আংগুলের জায়গার সাথে যে কারণে মুখমণ্ডল স্পর্শ করলে আংগুল স্পর্শ করার অনূভুতি পাওয়া যায়।
এ থেকে বৈজ্ঞানিকেরা একটা অনুসিদ্ধান্তে আসেন যে আমাদের ব্রেইন যতোটা নমনীয় ভাবা হয় তার চাইতেও অনেক বেশি নমনীয় এবং পরিবর্তনশীল।
ব্রেইনকে সুপার কম্পিউটারের মতো শক্তিশালী করতে হলে আমাদের যা করতে হবে তা হলো
১. ব্যায়াম করা
ব্যায়াম আমাদের মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এছাড়া মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ে। যার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। এছাড়া ব্রেইন ব্যায়ামকালীন সময়ে কিছু হরমোন তৈরি করে যা মস্তিষ্কের কোষকে উদ্দীপিত করে এবং নতুন নতুন কোষ সৃস্টিতে সাহায্য করে এর ফলে আমাদের মস্তিষ্ক আরো কর্মক্ষম হয়ে উঠে। হয়ে উঠে আরো শক্তিশালী।
আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন যারা অলিম্পিকে দাবা খেলে তাদের কঠিন শরীরচর্চা করতে হয় কারণ এর ফলে ব্রেইনে নতুন নতুন সংযোগ তৈরি হয়। নতুন নতুন সংযোগ তৈরি হওয়া মানে বুদ্ধি আরো বাড়া। সে কারনে দাবা খেলার মতো একটা নিস্ক্রিয় খেলা যেখানে খেলোয়াড়কে বসে থাকতে হয় সেরকম একটা খেলায় পারদর্শী হতে গেলেও যথেষ্ট পরিমান ব্যায়ামের প্রয়োজন হয়।
অতএব আপনি যদি ব্রেইনকে শক্তিশালী করতে চান তাহলে আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। এজন্য যে আপনাকে জিমে গিয়ে কঠিন ব্যায়াম করতে হবে তা নয়। আপনি নিয়মিত আধঘন্টা হাটতে পারেন, সাতার কাটতে পারেন বা ঘড়ের মধ্যে হালকা এক্সারসাইজ করতে পারেন।
এভাবে আপনি ব্রেইনকে সচল করতে পারেন। এই সচলতা আপনার ব্রেইনকে সুপার কম্পিউটারের ন্যায় ক্ষমতা দান করবে।
২. খাবার
ব্রেইনের শতকরা ৯০ ভাগ ফ্যাট। আর ব্রেইনের মূল খাদ্য হলো গ্লুকোজ কিন্তু তাই বলে ব্রেইনের নিউট্রিশনের জন্য অন্য কোন খাদ্যের প্রয়োজন নেই, মিনারেল বা ভিটামিনের দরকার নয় তা কিন্তু নয়। আপনি যদি নিয়মিত খাওয়া দাওয়া না করেন এবং ব্রেইনের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার না খান তাহলে দেখা যাবে আপনার ব্রেইন কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে।
ব্রেইনের জন্য উপকারী খাবারের মধ্যে ১নং খাবারটি হচ্ছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। এটি মাছ, মাছের তেল, বাদাম এসব খাবারে পাওয়া যায়। আপনাকে তাই নিয়মিত এসব খাবার খেতে হবে। আর ব্রেইনের জন্য চরম শত্রু হচ্ছে অসম্পৃক্ত চর্বি অর্থাৎ প্রাণীজ চর্বি।
প্রাণীজ চর্বির মধ্যে আছে গরু,ছাগল ইত্যাদির চর্বি। আপনি যদি ব্রেইনের ক্ষতি করতে না চান তাহলে এ জাতীয় চর্বি থেকে নিজেকে দূরে রাখুন আর সবসময় ওমেগা ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৩. গান শোনা
আপনি যখন কোন গান শুনছেন তখন গানের তাল, লয়, ছন্দ ও কথা এগুলো বিষয়গুলো আপনার ব্রেইন খুব সুন্দর ভাবে হিসাব করতে থাকে এবং এই হিসাব করতে গিয়ে ব্রেইনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। দেখা গেছে ব্রেইন যখন সংগীত শোনে তখন এম্যাগডেলা নামক গ্রন্থিকে দমিয়ে রাখে।
এম্যাগডেলা হচ্ছে আমাদের ভয় এবং নেতিবাচক চিন্তার একটি কেন্দ্র তাই আপনি যদি নিজেকে নেতিবাচক চিন্তা ও ভয় থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চান তাহলে আপনাকে সংগীত শুনতে হবে। তাছাড়া গান আমাদের উদ্বেগ কমায়, বিষন্নতার উন্নতি ঘটায়, রক্তচাপ কমায় এবং ডায়াবেটিস কমায় সে কারণে আপনার এই বহুবিধ উপকারের জন্য আপনাকে নিয়মিত গান শোনা উচিত।
একজন জাপানী লেখক আছেন হারুকি মুরাকামি উনি যখন লেখেন তখন গান চলতে থাকে।
৪. ধ্যান বা মেডিটেশন
ধ্যান করা মানে হচ্ছে নিজের মধ্যে নিজে নিমজ্জিত হওয়া। নিজেকে দুনিয়ার সব কিছু থেকে আলাদা করে দিয়ে নিজের জগতে প্রবেশ করা। দেখা গেছে ধ্যান করলে আমাদের রক্তচাপ কমে, ডায়াবেটিসের উন্নতি হয়, উদ্বেগ ও বিষন্নতা হ্রাস পায়। আমাদের ব্রেইনের কার্যকারিতা বাড়ে।
গবেষণায় দেখা গেছে যখন ধ্যান করা হয় তখন দেহের প্রতিটি অংগ একই সাথে একই সময়ে সিনক্রোনাইস ওয়েতে ব্রেইনে ইমপালস পাঠায় অর্থাৎ ব্রেইনের মধ্যে একটি সরল ছন্দিত স্পন্দন তৈরি হয়। এটা ব্রেনের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ধ্যান আমাদের মনোযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ব্রেইন ধ্যানের সময় নতুন নতুন সংযোগ সৃস্টি করে। তাই প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্যে হলেও ধ্যান করুন। নিজের মধ্যে নিজে থিতু হবার জন্য ধ্যানের মতো উত্তম উপায় নেই।
ধ্যানের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে।আপনি যে কোন একটা পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন।ধ্যানের উপকারিতা নিয়ে একটা গবেষণা আছে সে গবেষণায় কিছু লোককে ধ্যান করতে বলয়া হয় এবং কিছু লোক কে ধ্যান করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয় পরবর্তীতে উভয় দলকে কম্পিউটারে কিছু শব্দ দেখানো হয় এই শব্দের মাঝে কিছু সংখ্যা ছিলো।
তাদের কাজ ছিলো সংখ্যাগুলো নির্দিষ্ট করা। দেখা গেলো যারা ধ্যান করেছে তারা দ্বিতীয় দল থেকে অধিক পরিমাণে সংখ্যা চিহ্নিত করতে পেরেছে। ধ্যান আমাদের মনোনিবেশ করা এবং মনোসংযোগ ধরে রাখার সক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
৫. ভিডিও গেম খেলা
ভিডিও গেম খেললে হাত ও চোখের সমন্বিত ভাবে কাজ করার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রেওয়ার্ড সিস্টেম টা স্টিমুলেট হয় যার ফলে ব্রেনে ভালো লাগার বোধটা সৃষ্টি হয়। যারা ভিডিও গেম খেলে তাদের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং যে কোন তথ্য প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
দেখা গেছে যেসব সার্জনরা দিনের বেলা কিছু সময়ের জন্য ভিডিও গেম খেলেন তারা যারা খেলেন না তাদের চেয়ে সার্জারী করার সময় এক তৃতীয়াংশ ভুল কম করেন। তার মানে এই নয় যে সারাক্ষণ ভিডিও গেম নিয়ে পড়ে থাকতে হবে অথবা আসক্তিকর অথবা যেসব ভিডিও গেমে জুয়া খেলা হয় সেসব গেম মোটেও উপকারী নয়।
ভিডিও গেম নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।এছাড়া কিছু কিছু গেম আছে যেসবে ভায়োলেন্স করার জন্য উৎসাহিত করা হয় এসব গেম থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। দিনের কিছু সময় আপনি এটা খেলতে পারেন কিন্তু অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেনো এটা আসক্তির পর্যায়ে না যায়।
৬. চা এবং কফি
ব্রেইনকে সক্রিয় বা সতেজ করে তোলে এমন কিছু বস্তু রয়েছে এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ক্যাফেইন যা আমরা চা অথবা কফি থেকে পেয়ে থাকি। চা এবং কফি খেলে ব্রেইন স্টিমুলেট হয় এবং মনোযোগ দেবার ক্ষমতা বাড়ে কিন্তু তাই বলে আপনি যদি কাপের পর কাপ কফি খেতে থাকেন তাহলে পরে এটি আপনার উদ্বিগ্নতা ও হৃদ স্পন্দন বাড়িয়ে দেবে এবং অনিদ্রা ঘটাবে।
সে কারণেই আপনাকে কফি বা চা পানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমিতবোধের পরিচয় দিতে হবে।আপনি সকালবেলা এক কাপ কফি বা চা দিয়ে দিন টা শুরু করতে পারেন। এছাড়া আপনি আরো ১/২ কাপ বিকেলের আগেই খেয়ে নিতে পারেন। বিকেল পর কফি খাওয়া টা আপনার জন্য উচিত হবে না কেননা এর ফলে আপনার নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটাবে।
এছাড়া আরো কিছু উত্তেজক বস্তু আছে যেমন আমফিটামিন,কোকেইন। এগুলো সাময়িক সময়ের জন্য ব্রেইনের সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে। কিন্তু এসব বস্তু আপনার মধ্যে দ্রুত আসক্তি তৈরি করবে এবং এসব বস্তু গ্রহনের জন্য নির্ভরশীলতা তৈরি করবে যা শেষ পর্যন্ত আপনার মস্তিষ্কের জন্য স্থায়ী ক্ষতি বয়ে আনবে।
তাই এসব বস্তু সম্পূর্ণ ভাবে পরিহার করতে হবে। আপনি পরিমিত মাত্রায় কাফেইন হিসেবে চা এবং কফি গ্রহণ করতে পারেন।
Discover more from অভিযাত্রী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.