বিশেষ প্রতিবেদন

সাবমেরিন ক্যাবল: আধুনিক যোগাযোগের মেরুদণ্ড

দ্রুত, নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য ডাটা স্থানান্তরের জন্য সাবমেরিন ক্যাবলের গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

বিজ্ঞাপন

পৃথিবীর আদিকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যোগাযোগ। মানুষ, রাষ্ট্র, সংগঠনসহ নানা কিছুর সাথে যার যত বেশি যোগাযোগ সেটি বেশি উন্নত হয়। বিজ্ঞানের কল্যাণে এখন বিশ্বে যোগাযোগের নানা পদ্ধতি চালু হয়েছে।

এই যোগাযোগের মাধ্যমে শক্তিশালী করতে সারা দুনিয়া জুড়ে সর্বদা কাজ চলছে। তবে দ্রুত যোগাযোগ অথবা ডাটা স্থানান্তর করতে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো সাবমেরিন কমিউনিকেশন্স ক্যাবল। এটির মাধ্যমে খুব সহজে ও বেশি দূরত্বে যোগাযোগ এবং ডাটা স্থানান্তর করা যায়।

তবে এই পদ্ধতিতে কোন সমস্যার সৃষ্টি হলে সেটির সমাধান করা একটু কষ্টকর হয়। তবে এই পদ্ধতিতে দ্রুত ও নিরাপদে তথ্য স্থানান্তরের জন্য বিশ্বে বহুল ব্যবহার হয়। এটি সাধারণত সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে স্থাপন করা হয় তাই এই পদ্ধতির নাম সাবমেরিন ক্যাবল দেওয়া হয়েছে।

সাবমেরিন ক্যাবল কি?

সাবমেরিন শব্দ দুটি ভিন্ন শব্দের মাধ্যমে গঠিত। যেখানের সাব শব্দের অর্থ নিচে, আর মেরিন অর্থ হচ্ছে সাগর বা সমুদ্র। মূলত সাগরের নিচে এই ক্যাবল গুলোকে বিছানোর জন্য ব্যবহার করা হয় বিশাল আকারের জাহাজ। এছাড়াও তাদের সাথে কাজ করেন একদল দক্ষ ডুবুরি।

সাবমেরিন ক্যাবলের ইতিহাস

মহাকাশের স্যাটেলাইট যোগাযোগের বিকল্প হিসেবে একদেশ থেকে অন্যদেশ। কিংবা এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশ পর্যন্ত ইন্টারনেট অথবা টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো উন্নত, দ্রুত এবং সাশ্রয় করার লক্ষ্যে এই সাবমেরিন ক্যাবল।

বিজ্ঞাপন

প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল

সর্বপ্রথম ১৮৫০ সালে ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছিল, যদিও প্রথম যাত্রায় সেই কাজ পুরোপুরি ভাবে সফল হয়নি। এর পরে ১৯৫৩ সালে আবারো দ্বিতীয় চেষ্টা করা হয়। যা সঠিক ভাবে কাজ করেছিল। অবশ্য সেই তারটি ছিল কপার দিয়ে তৈরি। কিন্তু বর্তমানে এই সাবমেরিন ক্যাবল গুলতে ব্যবহারিত হচ্ছে অপটিক্যাল ফাইবার।

বাংলাদেশে সাবমেরিন ক্যাবল

বাংলাদেশ প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল সি-মি-উই-৪ ২০০৬ সালে সংযোগ হয়। এই ক্যাবলের কার্যক্ষমতা ইতোমধ্যে শেষের দিকে এসেছে। এরপর ২০১৭ সালে দেশে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল যুক্ত হয়। এটির নাম ‘সি-মি-উই-৫’ যা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য-পশ্চিম ইউরোপ এর একটি অপটিক্যাল ফাইবার। এটি প্রায় ২০,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ।

সি-মি-উই-৫ ক্যাবলের বিবরণ

এই ক্যাবলের মাধ্যমে দিয়ে পূর্ব এশিয়া, ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে ২৪ টেরাবাইট ব্রডব্যান্ড যোগাযোগ সরবরাহ করে। ক্যাবলটি ১৯টি ল্যান্ডিং পয়েন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সাথে সংযুক্ত। দেশের পটুয়াখালী জেলার ল্যান্ডিং স্টেশনের সাথে যুক্ত হয়। এতে বাড়তি ১৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাচ্ছে বাংলাদেশ। কোন কারণে প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলটি বিচ্ছিন্ন হলে তার বিকল্প হিসেবে কাজ করবে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল।

তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের প্রস্তাব

আমাদের দেশের সরকার বর্তমানে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল নিয়েও ভাবছে। তথ্যপ্রযুক্তির মহাসড়কে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকতে চায় না। দেশের তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যত চাহিদার কথা ভেবে বাংলাদেশ তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হওয়ার বিষয়টিও সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবে।

সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যবহার

বর্তমান বিশ্বের যোগাযোগ সবচেয়ে গতিশীল সেতত বেশি উন্নত। পৃথিবীতে আর গাড়ি, চাকা, টেলিগ্রাম এসব যোগাযোগের ব্যবহার একদম কমে গেছে। এখন ইন্টারনেট প্রযুক্তির যুগ। এ যুগে যে দেশের ইন্টারনেট বা ব্যান্ডউইথ যোগাযোগ বেশি তার কার্যক্রম তত সফল।

বিজ্ঞাপন

সাবমেরিন ক্যাবলের সুবিধা

আর এই যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হলো সাবমেরিন ক্যাবল যার মাধ্যমে খুব দ্রুত যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। ফলে প্রতিটি দেশ এ ধরণের ক্যাবল যোগাযোগকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছে। কারণ আগের রেডিও ট্রান্সমিশন যোগাযোগ বা ওয়ারলেস যোগাযোগে আবহাওয়ার অবস্থা খারাপ থাকলে যোগাযোগের গতিশীলতা ও ডাটা ট্রান্সফার ধীর হতো।

ফলে এই অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমের যোগাযোগ সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সাথে সাথে দেশের ইন্টারনেট সংযোগ আরো বেশি গতিশীল হয়ে উঠেছে। এই ক্যাবলের মাধ্যমে আমরা অতিরিক্ত কয়েক হাজার ব্যান্ডউইথ পেয়ে যাচ্ছি। ফলে ভারতের উপর যে নির্ভর করতে হতো এখন সেটি অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যবহারের উপকারিতা

এখন আমরা নিজেদের ক্যাবল সংযোগের ব্যান্ডউইথ নিয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করতে পারছি। এই দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের মাধ্যমে দিয়ে দেশের আইসিটি খাতে অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সব সংকট মিটিয়ে অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ বিদেশে রপ্তানি করা যাবে বলেও মনে করেন আইটি বিশেষজ্ঞরা।

তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের অনুমোদন

দেশের তৃতীয় সাবমেরিন প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এর অনুমোদন দেওয়া হয়। ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন’ শীর্ষক এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।

প্রকল্পের ব্যয়

এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৩ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা। এতে সরকার দেবে প্রায় ৩০১ কোটি টাকা এবং বাকি ৩৯২ কোটি টাকা আসবে বিএসসিসিএল হতে। চলতি বছরের কাজ শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এর বাস্তবায়ন সম্পন্ন।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের সুবিধা

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশের তৃতীয় সি-মি-উই-৬ সাবমেরিন ক্যাবলটি ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূ-মধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।

ক্যাবলের ল্যান্ডিং স্টেশন

ক্যাবলটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিশর ও ফ্রান্সে। দেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কক্সবাজারের ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এই ক্যাবলের মাধ্যমে ১০ হাজার জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ নেবে বাংলাদেশ।

সাবমেরিন ক্যাবলের কার্যকারিতা

যে দেশে যত বেশি সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে যুক্ত সে দেশের ইন্টারনেট গতি তত বেশি। আর বর্তমানে ইন্টারনেট গতির উপর নির্ভর করে অনেক কিছু। তাই এই ক্যাবলের সাথে যুক্ত হওয়া একটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বাংলাদেশে ইন্টারনেট গতি

বাংলাদেশে যখন একটি সাবমেরিন ক্যাবল ছিলো তখন ইন্টারনেটের গতি বেশ কম ছিলো যাতে বিভিন্ন ভার্চুয়াল কাজ সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হতো। এতে করে দেশের আইটিসহ ইন্টারনেট নির্ভর খাতগুলোর কোন উন্নতি হতো না।

দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সুবিধা

ফলে দেশে সারা পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে পিছিয়ে থাকতো কিন্তু এখন দেশের সাথে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল যুক্ত হওয়ায় ইন্টারনেট সেক্টরের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। দেশের এখন আইটি খাতে অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সব সংকট মিটিয়ে অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ বিদেশে রপ্তানি করা যাবে বলেও মনে করেন আইটি বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)

বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) হল বাংলাদেশের একটি মূল টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী সংস্থা। এটি বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক সাবমেরিন ক্যাবল অপারেটর। সেই সাথে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আই আই জি), এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার (আই এস পি) লাইসেন্স ধারী।

সংস্থার কার্যক্রম

এই সংস্থা দেশের সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে সম্পর্কিত সব কিছুর দেখাশোনা করে। বর্তমানে দেশে দুটি সাবমেরিন ক্যাবল থাকায় নিরবিচ্ছিন ইন্টারনেট সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন সবাই। কারণ বিভিন্ন কারণে যদি কোন একটি ক্যাবলের মাধ্যমে ঝামেলা হয় তবে অন্যটির মাধ্যমে ইন্টারনেট সহ সকল ডাটা ট্রান্সফার সেবা গ্রহণ করা যায়।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

কিন্তু আগে একটি সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে দেশ যুক্ত থাকায় মাঝে মধ্যে সেবার মান খারাপ হতো। এছাড়াও আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল দেশের সাথে যুক্ত হলে দেশের ইন্টারনেট গতিতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে।

সমাপ্তি

সাবমেরিন ক্যাবল আধুনিক যোগাযোগের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি দ্রুত, নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য ডাটা ট্রান্সফারের জন্য একটি অত্যন্ত কার্যকর মাধ্যম। বাংলাদেশে সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যবহার দেশের ডিজিটাল অগ্রগতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সাথে সাথে দেশের ইন্টারনেট সংযোগ আরো বেশি গতিশীল হয়ে উঠেছে। এই ক্যাবলের মাধ্যমে আমরা অতিরিক্ত কয়েক হাজার ব্যান্ডউইথ পেয়ে যাচ্ছি। ফলে ভারতের উপর যে নির্ভর করতে হতো এখন সেটি অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

এখন আমরা নিজেদের ক্যাবল সংযোগের ব্যান্ডউইথ নিয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করতে পারছি। এই দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের মাধ্যমে দিয়ে দেশের আইসিটি খাতে অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সব সংকট মিটিয়ে অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ বিদেশে রপ্তানি করা যাবে বলেও মনে করেন আইটি বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞাপন

তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের অনুমোদন দেশের ডিজিটাল অগ্রগতিতে একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে। এটি দেশের ইন্টারনেট গতি আরো বেশি উন্নত করবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) এই প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করবে এবং দেশের ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবে।

সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন ডিজিটাল যুগের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, যেখানে দ্রুত, নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে। এই ক্যাবলের মাধ্যমে আমরা নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারব এবং বিশ্বের সাথে আমাদের সংযোগ আরো শক্তিশালী করতে পারব।


Discover more from অভিযাত্রী

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

আব্দুস সবুর (লোটাস)

My name is Abdus Sabur Lotus. I am a sub-editor at ovizatri.com and a co-founder of this online news and magazine portal. I have worked as a journalist for various Bangladeshi news portals and agencies, both online and offline. I contribute to Haal Fashion and previously served as the Rajshahi University Correspondent for Kalbela. I was also the General Secretary of the Rajshahi University Journalists' Association. I graduated with a degree in Journalism from Rajshahi University. Stay updated with ovizatri.com.

আপনার মতামত জানান?

বিজ্ঞাপন
Back to top button

Discover more from অভিযাত্রী

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading