পেওনিয়ার কি? ফ্রিল্যান্সারদের জন্য আন্তর্জাতিক লেনদেনের সেরা সমাধান
একটি ভার্চুয়াল ব্যাংক যা আপনার ব্যবসাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে
পেওনিয়ার কি? জানুন কীভাবে এই ভার্চুয়াল ব্যাংক আপনাকে বিশ্বব্যাপী অর্থ লেনদেন করতে সাহায্য করতে পারে। ফ্রিল্যান্সাররা এবং অনলাইন ব্যবসায়ীরা পেওনিয়ার ব্যবহার করে কীভাবে লাভবান হতে পারেন, তা জানুন।
পেওনিয়ার (Payoneer) কি?
পেওনিয়ার এটি কে আমরা ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক বলতে পারি। সারা বিশ্বের লোকজন এখানে টাকা লেনদেন করতে পারেন। এটি হলো আন্তর্জাতিক ওপেন ব্যাংক, বা ভ্যার্চুয়াল ওয়ালেট। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করেন তার সাথে অন্য দেশের ক্ল্যায়েন্ট দের সাথে ব্যাবসা করতে চান তাহলে আপনার প্রয়োজন পড়বে পেওনিয়ারের।
কারণ এটির মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন দেশের সাথে লেনদেন করতে পারবেন। যেমন ধরুন আপনি আমেরিকা, ফ্রান্স, ইতালি থেকে টাকা লেনদেন করবেন কিভাবে করবেন? যদি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা থাকে তাহলে আপনি সহজেই অর্থ লেনদেন করতে পারবেন। কিন্তু বাহিরে দেশে একটি ব্যাংক আ্যাকাউন্ট খোলা এমন কথার মতো বলা সহজ নয়। সেক্ষেত্রে আপনি কি করবেন?
এই ক্ষেত্রে আপনার জন্য সবথেকে ভালো উপায় হলো যে, একটি পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট খোলা কেননা এটির মাধ্যমে বিশ্বের ২০০ টি দেশ থেকে আপনি টাকা লেনদেন করতে পারবেন।
পেওনিয়ার (Payoneer) কীভাবে কাজ করে?
পেওনিয়ার আপনাকে বিভিন্ন দেশের কারেন্সিতে লেনদেন এর জন্য। যে দেশে লেনদেন করবেন সে দেশের লোকাল ব্যাংকের আদলে একটি ভ্যার্চুয়াল অ্যাকাউন্ট খুলে দিবে। এর মাধ্যমে আপনি সে দেশের কারেন্সির আদলে বদলে দিবে। যেমন ধরেন ডলার, ইউরো, কানাডিয়ান ডলার, জাপানিজ ইয়েন ইত্যাদি কারেন্সি লেনদেন করতে পারবেন।
পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে যে যৌগ্যতা থাকতে হবে তা হল আপনার বয়স প্রথমত ১৮ বছর হতে হবে। আর আপনাকে অবশ্যই সেদেশের নাগরিকত্ব এর এন আইডি অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট কিছু অসুবিধা আছে যদিও আমরা পেওনিয়ার কে ভ্যার্চুয়াল ব্যাংক বা আন্তর্জাতিক ব্যাংক বলেছি।
এটি আপনাকে প্রচলিত ব্যাংকিং এর সুবিধা প্রদান করবে না। আপনি পেওনিয়ার এর মাধ্যমে ঘরে বসে শুধু অন্য দেশের ক্ল্যায়েন্ট এর সাথে অর্থ আদান প্রদান করতে পারবেন। বাইরের দেশে আপনার কোন ব্যবসা থাকে আপনি সে দেশের কারেন্সিতে লেনদেন করতে পারবেন।
পেওনিয়ার (Payoneer) অ্যাকাউন্ট কীভাবে খুলবেন?
পেওনিয়ার যেহতু একটি ভ্যার্চুয়াল ব্যাংকিং ব্যবস্হা। আর এখানে নগদ অর্থ সঞ্চয় থাকে না তাই বেশি কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না। যেসব কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় তা হলো আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স। এগুলার যে কোনো একটির তথ্য জমা দিতে হবে।
পেওনিয়ার সত্যতা যাচাই এর জন্য এর জন একটি সেল্ফি তুলে আপলোড দিতে বলবে। আপনি বাসায় বসে পিসি ল্যাপটপ বা মোবাইল দিয়ে খুলতে পারবেন। মোবাইল দিয়ে পেওনিয়ার অ্যাপ ডাউনলোড করে আক্যাউন্ট খুলতে পারবেন। পেওনিয়ার আ্যকাউন্ট খোলার ধরণ এটি আপনি দুইভাবে খুলতে পারবেন।
এক, নিজস্ব পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট। দুই, কোম্পানি ভিত্তিক পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট আপনি যদি নিজস্ব পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট খুলতে চান। তাহলে আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সর তথ্য জমা দিতে হবে তার সাথে ব্যাংক আ্যকাউন্ট এর তথ্যও দিতে হবে।
আপনি যদি কোম্পানির পেওনিয়ার আ্যকাউন্ট খুলতে চান তাহলে আপনাকে উক্ত প্রতিষ্ঠান এর ট্রেড লাইসেন্স অথবা ইনকাম টাক্স এর তথ্য প্রদান করতে হবে।
পেওনিয়ার (Payoneer) অ্যাকাউন্ট কীভাবে বাংলাদেশে থেকে খুলবেন?
প্রথমে আপনি পেওনিয়ারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট যাবেন। এবং ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর সাইন-ইন নামক একটি আইকন দেখতে পাবেন সেখানে আপনি চাপ দিবেন। সেখানে চাপ দেবার পর আপনাকে দুইটি অপশন দেখাবে ‘প্রবেশ করুন’, ও ‘নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন’।
আপনি ‘নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন’ এর টাই চাপ দেবেন। এরপর আপনাকে একটি নতুন পৃষ্ঠায় নিয়ে যাবে। সেখানে আপনি যদি নিজস্ব অ্যাকাউন্ট খুলতে চান তাহলে সেখানে চাপ দিবেন আর যদি আপনি প্রতিষ্ঠান এর অ্যাকাউন্ট খুলতে চান সেখানে চাপ দিবেন।
এরপর আপনাকে একটি নতুন পৃষ্ঠায় নিয়ে যাবে যেখানে আপনার ব্যক্তিগত কিছু তথ্য চাইবে যেমন আপনার দেশের নাম, শহরের নাম, পোস্ট কোড ইত্যাদি। তার সাথে মোবাইল নম্বর। এরপর সেন্ড কোড অপশনে চাপ দিবেন। তখন আপনার মোবাইলে একটি ৬ সংখ্যার কোড আসবে কোড টি বক্সে সঠিক ভাবে প্রদান করবেন তারপর আপনি পরবর্তী তে চাপ দিবেন।
এরপর আপনার সামনে একটি পৃষ্ঠা আসবে সেখামে আপনার আ্যকাউন্ট এর নিরাপত্তার সার্থে একটি উইজার নেম আর ইমেল প্রদান করবেন। এই অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড সেট করবেন। তার সাথে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করে পরবর্তী তে চাপ দিবেন।
এবার আপনাকে যেটা করতে হবে, আপনি অর্থ আদান-প্রদান এর জন্য যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করবেন সেটার তথ্য জমা দিবেন এবং দেশ নির্বাচন করবেন যে শাখায় আপনার ব্যাংক সেটার হোল্ডার নাম্বার, আর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর প্রদান করবেন। সর্বশেষ, সম্মতি তে চাপ দিবেন তাহলে আপনার একটি পেওনিয়ার আ্যকাউন্ট খোলা হয়ে যাবে।
অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই হতে কয়েক দিন সময় লাগবে। আপনি সঠিক তথ্য দিয়েছেন কিনা? এরপর অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই হয়ে গেলে আপনি অর্থ আদান প্রদান করতে পারবেন।
বর্তমান বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং দিন দিন বড় পরিসরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেননা এইটাতে নিজের পছন্দ মতো কাজ করে অর্থ উর্পাজন করার সুবিধা আছে। আর সেই অর্থ আপনার হাতে নিশ্চিতভাবে পৌঁছিয়ে দিবে পেওনিয়ার।
Discover more from অভিযাত্রী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.