- Advertisement -
- Advertisement -
ইসলাম ধর্ম

ধর্ম ও দৈহিক চাহিদা: ইসলামের প্রেক্ষিতে যৌনতা

- Advertisement -
- Advertisement -

Disclaimer: The views and opinions expressed in this article are those of the author and do not necessarily reflect the official policy or position of any religious group or authority. The content provided is for educational purposes only and is not intended to be a substitute for professional advice. The discussion of sexual (যৌনতা) topics within the context of Islam in this article is based on the author’s interpretation of religious texts and should not be taken as theological advice. Readers are encouraged to consult with knowledgeable religious scholars for any religious guidance on the subject matter. The author acknowledges the sensitivity of the topic and has made every effort to approach it with respect and care for the beliefs and practices of all readers.

আমি যদি এই প্রবন্ধের নাম দিই ‘ইসলাম ও যৌনতা’ তাহলে খুব সম্ভবত আমাদের মধ্যে অনেকেই একবার ‘নাউজুবিল্লাহ’ পড়া শুরু করে দেবে। এমন কেন মনে হয় যে, ইসলামের রীতিনীতি ‘যৌনতা (সেক্স)’ কে সমর্থন তো করে কিন্তু গলা উঁচু করে সমর্থন করে না। এমন কেন মনে হয়, ইসলামিক কিতাব সমূহ যৌনতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মানে ইসলাম ও যৌনতা বিষয়টি কোনভাবেই হাত ধরে হাঁটতে পারে না।

যৌনতা (সেক্স) এর ধারণা সাধারণত আমাদের কাছে অপবিত্র এবং ট্যাবু। আপনি কখনোই দেখবেন না যে, যৌনতা মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এ বিষয়ে খোলামেলা আলাপ চলছে। যৌন সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলাপচারিতাও আমাদের মধ্যে একধরনের সঙ্কোচ তৈরি করে। অথচ, দেশের জনসংখ্যা ৮ কোটি থেকে মাত্র স্বাধীনতার ৫০ বছর পর প্রায় ১৮ কোটিতে রুপান্তরিত হয়েছে।

তারমানে যৌনতা হচ্ছে, যৌনতার প্রচলন আছে কিন্তু যৌনতা সেহেতু করেছেন বা করেন নাই তাই এটাকে ‘ওভাররেটেড’ বা ‘আন্ডাররেটেড’ হিসেবে দাবীও করতে পারছেন না। কি অদ্ভুত তাই না! শরীর নিয়ে, শরীরের স্পর্শকাতর অংশ নিয়ে, উত্তেজনা নিয়ে, যৌনতার অবস্থান (সেক্স পজিশন) নিয়ে, যৌনতায় ভোগা সমস্যা নিয়ে আমরা কখনোই মুখ খুলি না। আমি তো কাউকে মুখ খুলতে দেখি নাই।

খুব কাছের বন্ধুটাও খুব ভালো করে বলতে অক্ষম থেকে গেছে, “তারা বিছানায় কেমন?” বা “তারা যৌনতা ঠিক কতটুকু উপভোগ করতে পারছে?” সিলেবাসের বাইরে গিয়ে অন্তত এটুকু নিজেরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা না করলে আমরা যদি কোন সমস্যায় থাকি তা থেকে পরিত্রাণ পাবো কীভাবে? যৌনতা যদি এত অতিরঞ্জিত বিষয় হয় তাহলে দেশের জনসংখ্যা আজ এই পর্যায়ে আসতো না এবং ভোগান্তির চরম সীমা অতিক্রম করতো না।

- Advertisement -

যৌনতা সম্পর্কিত বেশিরভাগ বই বা চটি বই ‘কামসূত্র (বাৎস্যায়নের কামসূত্র)’ বই থেকে ধার করা। সৌভাগ্য না দূর্ভাগ্য কিনা জানিনা আমি এই পুরো ‘কামসূত্র’ পড়েছি এবং আমার মতে, আজ পর্যন্ত এরচেয়ে ভালো যৌনতা বিষয়ক কোন বই পৃথিবীতে হয়তো আর নাই। বিশেষ করে যে রেটোরিক ডিভাইস এই বইয়ের মধ্যে ব্যবহার হতে দেখা যায় সেটা আপনি আধুনিক যৌন শিক্ষার বইগুলোতেও পাবেন না।

কিন্তু মুসলিমরা ‘কামসূত্র’ কেন পড়বে? হ্যাঁ, পড়লে খুব বেশি ক্ষতি বোধহয় হবে না কিন্তু যৌনতার অবস্থান (সেক্স পজিশন) এর চিত্রায়ণ দেখা তো চলবে না। এছাড়াও এমন মানা হয় যে, হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে শিবের দ্বাররক্ষক নন্দী কামশাস্ত্রের আদিরচয়িতা। তিনি শিব ও তার পত্নী পার্বতীর রমণকালে উচ্চারিত পবিত্র বাণী শুনে মুগ্ধ হন। পরে মানবজাতির কল্যাণার্থে সেই বাণী লিখে রাখেন।

এই প্রবন্ধের বিষয় ‘কামসূত্র (যৌনসুখ)’ নয়। মুসলিম ও যৌনতা বিষয়ক এই প্রবন্ধে মুসলিমরা স্পষ্টত কামসূত্র অনুসরণ করবেন না। কারণ একাধিক রেফারেন্সে এই বই হিন্দুধর্মের অধীনে চলে যায়। একই সাথে এখানে ব্যক্ত করা সমস্ত যৌনতার অবস্থান (সেক্স পজিশন) ইসলাম সমর্থন করে না।

কিন্তু যৌনতার সাথে আব্রাহামিক ধর্মের সম্পর্ক দা-কুমড়া টাইপের। এখন আধুনিক বই এনে বাচ্চাদের বা যারা কিছুটা এডাল্ট তাদের ধরে ধরে সেক্স এডুকেশন দেওয়া শুরু করবেন তো মাইর খাবেন; স্বাভাবিক। তাহলে? যৌনতা (সেক্স) ইসলামে কি কোন গুরুত্ব বহন করে না? ইসলামে যৌনতা বিষয়ক শিক্ষা আসবে কোথা থেকে?

কিছু চা-স্টলের ফতোয়াবাজদের মতে ইসলামে যৌন শিক্ষা বাতিল করা হয়েছে, এসব ট্যাবু, এসব নিয়ে কথা বলাও পাপ। এই ছাপড়ি ফতোয়াবাজদের জন্য ইসলাম নামক ধর্ম ডুবতে চলেছে। ইসলামে যৌনতা বিষয়ক পবিত্র আল-কোরআনে বহু আয়াত আছে, হাদীস আছে। এমন রগরগে ও স্পষ্ট আয়াত ও হাদীসের দলিল থাকা সত্ত্বেও ইসলামে যৌন শিক্ষাকে হারাম বলে ঘোষণাও অনেকে দিয়েছেন।

ঠিকাছে, এখন রেফারেন্সে যাওয়া যাক,

“তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের জন্য শস্যক্ষেতস্বরূপ। অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেতে যেভাবে ইচ্ছা আগমন করো।”

– সুরা: বাকারা, আয়াত: ২২৩

এই ‘শস্যক্ষেত’ তসলিমা নাসরিনের ইসলামবিদ্বেষী বর্ণনা অনুযায়ী নারীবিদ্বেষী স্টেটমেন্ট নয়। এখানে এই ‘শস্যক্ষেত’ দ্বারা নারীর শরীর বুঝানো হয়েছে। এবং একই সাথে যৌনতার ক্ষেত্রে তূলনামূলক আধুনিক শব্দ ‘Fetish’ -কেও ব্যাখ্যা করা যায়। আবার ‘Oral Sex’ কেও ব্যাখ্যা করা যায়।

“আর লোকেরা তোমাকে প্রশ্ন করছে নারীদের ঋতুস্রাব সম্পর্কে। তুমি বলো, ওটা হলো কষ্টদায়ক বস্তু। অতএব ঋতুকালে স্ত্রীসঙ্গ থেকে বিরত থাকো। পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা ভালোভাবে পবিত্র হবে, তখন আল্লাহর নির্দেশমতে তোমরা তাদের কাছে গমন করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।”

- Advertisement -

– সুরা: বাকারা, আয়াত: ২২২

এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “(মাসিক কালীন সময়ে) সহবাস ব্যতীত তোমরা তাদের সাথে সব কিছুই কর।”

– সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৫৪৫

ঋতুস্রাব বা মাসিক বা পিরিয়ড কালীন সময়ে স্ত্রীর কাছে যাওয়া যাবে না। সরকার চালিত আলিয়া মাদ্রাসায় এসব বিষয়ে বেশ গুছিয়ে পড়ানো হয়। আমাকে এই বিষয়ে লিখতে হয়েছিলো দাখিল এক্সামে। বর্তমান সিলেবাসেও আপনি এসব খুঁজে পাবেন। ফলে শুধুমাত্র সরকার চালিত আলিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করা ছাত্রছাত্রীরা যৌনতা বিষয়ক শিক্ষা পেয়ে থাকে।

সুরা আল-বাকারাহ এর ১৮৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “ওরা (স্ত্রীরা) তোমাদের লেবাস এবং তোমরা তাদের লেবাস (পোষাক)।’’

- Advertisement -

মানে স্বামী-স্ত্রীর যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো রাখঢাক তো ইসলামে নাই। এমনকি ‘Oral Sex’ এর বিষয়ে পবিত্র আল-কোরআনে কিছুই বলা নাই এবং একাধিক তথ্যসূত্র ও হাদীস মতে, ‘Oral Sex’ -এ ইসলামের কোন সমস্যা নাই, সর্বোচ্চ মাকরূহ হিসেবে গণ্য হতে পারে তবে পায়ুপথে সঙ্গম করা যাবে না। মহান আল্লাহ্ তায়ালা বলেন,

“আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না।”

– সূরা আল-বাকারা: ২৮৬

সুতরাং ইসলামে যৌন স্বাধীনতার স্থান নেই এই ধারনা ভুল। এমন কি ইসলামে বহুগামীতাকেও শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দেয়া হয়েছে পুরুষদের জন্য। কিন্তু টেকনিকালি ইসলামিক শর্ত মোতাবেক চারটে বিয়ের অধিকার পুরুষদের দিলেও এই শর্তগুলো এত কঠিন যা পালন করা প্রায় অসম্ভব। কারণ চারজন স্ত্রীর সাথে নায্য আচরণ এবং অধিকার দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভবপর নহে।

ইসলাম ও যৌনতা নিয়ে প্রচুর পবিত্র আল-কোরআনে রেফারেন্স না থাকলেও হাদীসে অনেক আছে এবং ইসলামের ফিকহ্ আইন শাস্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বর্তমান ‘সেক্স এডুকেশন’ নিলে ইসলাম শেষ হয়ে যাবে এমন ধারণা ভুল।

- Advertisement -

যৌনতা যেমন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঠিক তেমন গুরুত্ব দিয়েই ইসলামি কিতাব সমূহে এর উল্লেখ আছে। কখন যৌনতা করবেন? কখন যৌনতা করবেন না? কীভাবে যৌনতা করবেন? কখন দু’জন মিলিত হবেন? কেন হবেন? কীভাবে হবেন? কি করলে ভালো হবে? এমনকি ইসলামে ফোর-প্লে পর্যন্ত অনেকাংশে জায়েজ।

কিন্তু এত রেফারেন্স থাকা সত্ত্বেও, দেশের জনসংখ্যা বাড়তে বাড়তে এখন বিশাল সংকোটের মধ্যে দেশ পড়ে গেছে। কারণ আজ পর্যন্ত কেউ শেখাই নাই যে, ইসলামে এ বিষয়ে কি আলোচনা করেছে? কি বলা হয়েছে? জন্তু-জানোয়ারের মত ১০-১৯টা বাচ্চা পয়দা করতে বলা হয়েছে? নাকি কোথাও সামর্থ্যের কথাও উল্লেখ আছে? জানেন না। আবার ‘সেক্স এডুকেশন’ -এও এলার্জি। ভাই, খাবার আর যৌনতা মানুষের মৌলিক চাহিদা। এই যে রাখঢাক তা আমাদেরকে পিছিয়ে দিচ্ছে।

ইউরো-সেন্ট্রিক সেক্স এডুকেশন নেবেন না, ঠিকাছে। কামসূত্র থেকে সেক্স এডুকেশন নেবেন না, তাও ঠিক আছে। কিন্তু সবাই মিলে একটি পরিপূর্ণ যৌনতার শিক্ষা বিষয়ক একটা গ্রন্থ তো তৈরি করেন তাহলে এত এত কুসংস্কার থেকে আমরা মুক্তি পেতাম।

- Advertisement -
- Advertisement -

মেহেদি হাসান

পরিচয়: আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। আমি একজন বহুমুখী ব্যক্তি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমার পেশাগত জীবন বিস্তৃত। লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, অডিও ও ভিডিও সম্পাদক, ছবি সম্পাদক, ইউটিউবার এবং নাট্য পরিচালক হিসেবে কাজ করি। মাইক্রোসফটের একজন ডেভেলপার এবং অ্যাপ ডেভেলপারও আমি। More »

Leave a Reply

- Advertisement -
Back to top button