কিং অব ক্যালিপ্সো হ্যারি বেলাফন্টে: নব্বই বছর বয়সে দেহাবসান
আজীবন লড়াই করে গেছেন আমেরিকার অশ্বেতাঙ্গদের অধিকারের জন্য
বিশ্বখ্যাত গায়ক ও নাগরিক অধিকার কর্মী হ্যারি বেলাফন্টে ৯৬ বছর বয়সে পরলোক গমন করেছেন। ক্যালিপ্সো সঙ্গীতকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলার জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। একজন প্রখ্যাত কর্মী হিসেবে তিনি আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলন, বিশ্ব শান্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন।
১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত “ক্যালিপ্সো” অ্যালবামের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জনকারী বেলাফোন্টে তার সারা জীবন জুড়ে বর্ণবাদ, দারিদ্র্য ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তিনি মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এবং নেলসন ম্যান্ডেলার মতো বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। “কিং অব ক্যালিপ্সো” হিসেবে পরিচিত বেলাফোন্টে তার সঙ্গীত ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। তার মৃত্যু কেবল সঙ্গীত জগতের জন্যই নয়, বরং সমগ্র মানবতার জন্য একটি বড় ক্ষতি।
বিখ্যাত গায়ক ও কর্মী হ্যারি বেলাফোন্টে ৯৬ বছর বয়সে মারা গেছেন। ক্যালিপ্সো সঙ্গীতকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলন, বিশ্ব শান্তি এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছিলেন। “ক্যালিপ্সো” (১৯৫৬) অ্যালবামের জন্য বিখ্যাত বেলাফোন্টে সারা জীবন জুড়ে বর্ণবাদ, দারিদ্র্য এবং যুদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এবং নেলসন ম্যান্ডেলার মতো বিখ্যাত কর্মীদের সাথে কাজ করেছিলেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। “কিং অব ক্যালিপ্সো” হিসেবে পরিচিত বেলাফোন্টে সঙ্গীত এবং কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।
‘হ্যারি বেলাফন্টে (১৯২৭- ২০২৩)’ কিং অব ক্যালিপ্সো – একটা আস্ত যুগ সঙ্গে করে নিয়ে চলে গেলেন। বয়স ছিয়ানব্বুই। তিনি এক ইতিহাস, রাজনীতি, সমাজ। কোনও দিন গান বাজনা (লোকসঙ্গীত) কে আলাদা ভাবেন নি নিজের অ্যাক্টিভিজমের সাথে।
প্রথম এক মানুষ যিনি এক অ্যালবামের বিক্রি মোট এক কোটি মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাওয়া এক রেকর্ডধারী শিল্পী। শুধুই কি তাই? ‘জ্যামাইক্যাল ফেয়ারওয়েল’ বা ‘ব্যনানো বোট সং’ -ও নন। তিনি আমেরিকা সিভিল রাইটসের আন্দোলন হোতা! অশ্বেতাঙ্গ দরিদ্রদের দাবী দাওয়া নিয়ে সরব এক কন্ঠ।
বুশ সাম্রাজ্যের নিরন্তর সমালোচক। আরও কত কি! ছিয়ানব্বুই বছর পার করা এক অতীব বর্ণময় জীবন তাঁর। আজীবন সমাজ বঞ্চিতদের জন্য কথা বলা তাঁর। বহু কর্মকাণ্ড তে জড়িত তাঁর জীবনধারা।
তাঁর ‘ক্যালিপ্সো’ ছন্দ তো আছেই, প্রতিষ্ঠান বিরোধী বিভিন্ন প্রতিবাদ বিভন্ন সাক্ষাৎকারে ফুটে ওঠা। সেই অপ্রতিম হ্যারি বেলাফন্টের বয়স জনিত কারণে কনজেস্টিভ হার্টফেলিওর দেহাবসান হয়েছে জানিয়েছেন তাঁর দীর্ঘ দিনের মুখপাত্র কেন শানসাইন, এক বিবৃতিতে।
আমেরিকার নিগ্রো থিয়েটারে গিয়ে অভিনয়ের প্রেমে পড়েছিলেন, ক্লাব সিঙ্গার রুপে অভিনয় প্রশিক্ষণের টাকা জোগাড়ে যাওয়া ও পারফর্ম করা। সেখানে বন্ধুত্ব সিডনি পটিয়ের সঙ্গে। আগে হতে চেয়েছিলেন অভিনেতা, পরে আমেরিকার লোকসঙ্গীতে মনোনিবেশ করা, ‘কিং অব ক্যালিপ্সো’ হয়ে ওঠা। পুর হলঘর নাচিয়ে দিতেন তিনি তাঁর ‘মটিণ্ডা’র সুরে সুরে। সমগ্র অডিটোরিয়াম তাঁর গলায় গলা মেলাতো।
১৯৫৬ সালে প্রথম মুক্তি লাভ ‘ক্যালিপ্সো’র সিঙ্গল অ্যালবাম দশ লক্ষ কপি বিক্রি! সেই অ্যালবামে ছিলো – ‘জ্যামাইক্যান ফেয়ার ওয়েল’, ‘ব্যানানো বোট সং’, ‘ব্রাউন স্কিন গার্ল’। পৃথিবীর সব কোণ ছুঁয়ে যায় তাঁর কন্ঠ। ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায় ‘বেলাফণ্টপ এট দ্য গ্রিক থিয়েটার’ তাঁর শেষ জনপ্রিয় অ্যালবাম।
গান বাজনার (লোক সঙ্গীত) লোক হলেও রাজনৈতিক মতাদর্শ সঙ্গ ছাড়েনি তাঁর। বারে বারের তাঁর ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়া। তাঁর বলা অমর বাণী, “আমার প্রথম গুরু পল রোবসন, দ্বিতীয় গুরু জন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র।”
জামাইকার অভিবাসী মা, বাবার সন্তান আজীবন লড়েছেন আমেরিকার অশ্বেতাঙ্গদের অধিকার নিয়ে। চিরটাকাল তাঁর পাশে থাকা আফ্রিকার বঞ্চিত মানুষদের হয়ে। গলা ফাটিয়েছেন ভেনেজুয়েলার আন্দোলনে, চিৎকার করেছেন কিউবার ফিদেল কাস্ত্রোর হয়ে।
তাঁর প্রতিবাদ কেবল পঞ্চাশ, ষাট দশকে এ নয়, প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ সমকাল পর্যন্ত চলেছে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হানা দেওয়া জঙ্গীদের সঙ্গে জর্জ বুশের একাসনে বসার তীব্র মন্তব্য বিদ্যুৎ ঝলসে দিয়েছিলো তামাম দুনিয়া।
ধীরে ধীরে বয়স বাড়া তাঁর চুলে পাক ধরা। ছিয়ানব্বুই হয়ে গেলেও থামা নয় তাঁর, লড়াই চলতেই থেকেছে। অবশেষে লড়াই থামলো তাঁর। তিনি কি যাচ্ছেন তাঁর ব্যনানো বোট এ চেপে পৌঁছচ্ছেন কি তিনি!
“Down the way
Where the nights are gay
And the sun shines daily on the mountaintop
I took a trip on a sailing ship
And when I reached Jamaica I made a stop
But I’m sad to say I’m on my way
Won’t be back for many a day
My heart is down
My head is turning around
I had to leave a little girl in Kingston town
Won’t be back for many a day
My heart is down
My head is turning around
I had to leave a little girl in Kingston town…”
– Harry Belafonte : Jamaica Farewell
Discover more from অভিযাত্রী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.