লাইফস্টাইল

টাকা জমানোর কৌশল: সঞ্চয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা অর্জন

অল্প অল্প করে সঞ্চয় করুন, ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকুন

বিজ্ঞাপন

আজকে কথা বলবো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে, সেটা হলো টাকা জমানো। আমরা যদি যা আয় করি তারচেয়েও বেশি ব্যয় করি, তাহলে আমরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ি। এটি মানুষের জন্য ভীষণ কষ্টকর। আমরা যদি একটু একটু করে টাকা জমানোর চেষ্টা করি, তাহলে টাকা জমাতে পারবো। এজন্য প্রথমে আমাদের করণীয়:

করণীয়

১. হিসাব করে চলা: প্রতিদিনের আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখা। ২. প্রয়োজনীয় খরচের টাকা সরিয়ে রাখা: প্রথমেই প্রয়োজনীয় খরচের টাকা আলাদা করে রাখা। ৩. অতিরিক্ত টাকা খরচ না করা: অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়িয়ে চলা।

টাকা সেভ না করার সমস্যা

টাকা সেভ না করলে যে কত রকমের সমস্যায় পড়তে হয়, তা আমি নিজে চোখে দেখেছি। একটি গল্প শেয়ার করি। আমার এক বন্ধু, সে অনেক ভালো জব করে এবং অনেক টাকাওয়ালা মানুষ। তার বিলাসিতার কোন কমতি ছিল না। যত টাকা আয় করতো, সবগুলোই সে খরচ করে ফেলতো।

দেখতাম বাজারের সবচেয়ে বড় ইলিশ মাছ তার বাসায় যেত। সে যখন কাপড় কেনাকাটা করতে যেত, দোকানের মালিক যত টাকা চাইতো, সে ঠিক তত টাকা দিয়েই জামাটা কিনে নিত। তার বাসায় ফলমূল ও খাবারদাবার কখনোই শেষ হতো না, বরঞ্চ নষ্ট হয়ে যেত। সে অনেক ভালো মনের মানুষ ছিল এবং গেস্টদের অনেক পছন্দ করতো।

আত্মীয়-স্বজনদের উপহার

আত্মীয়-স্বজনদেরকে অনেক উপহার দিত। আত্মীয়-স্বজনও তার জন্য পাগল ছিল। সে বলতেই পাগল। আত্মীয়-স্বজনের কোন অনুষ্ঠান হলে, সে থাকতো প্রধান অতিথি। এরকম করে দিনগুলো ভালই চলছিল। তার ছিল দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বাচ্চারা যখন বড় হচ্ছিল, টাকার খরচ বেড়ে যাচ্ছিলো। তখন অবশ্য আস্তে আস্তে আত্মীয়-স্বজনদের গিফট কেনা একটু কমে গিয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

করোনার মহামারী ও অর্থনৈতিক সংকট

এরমধ্যে চলে আসলো করোনার মহামারী। ধীরে ধীরে তার রোজগার কমতে শুরু করল। তখন সে আর আত্মীয়-স্বজনের খুব একটা খোঁজখবর নিতে পারতো না। একদম নিজের লোকজন ছাড়া যেমন তার বাবা-মা, ভাই-বোন এসব। তারপর যখন করোনা মহামারী প্রতিটা মানুষকে ঘরবন্দী করে ফেলল, তখন সে পড়ে গেল মহাবিপদে।

এর মধ্যে সেও প্রচুর অসুস্থ হয়ে পড়ল। তার তখন ছিল না জমানো কোন টাকা-পয়সা। সে প্রচন্ড হতাশার মধ্যে পড়ে গেল। সংসার চলা টানাটানি শুরু হয়ে গেল। এমনকি ঘরে মাঝে মাঝে বাজারও থাকতো না। আমি সেদিন দেখেছি, আমার ওই বন্ধুর আত্মীয়-স্বজনরা আর একবারের জন্যও খবর নেয়নি। তারা একটু ফোন করেও জিজ্ঞেস করেনি সে কেমন আছে, অসুস্থতা কেমন।

টাকা জমানোর প্রয়োজনীয়তা

এই পরিস্থিতি দেখার পর সে বুঝতে পেরেছে, টাকা-পয়সা না থাকলে কেউ দাম দেয় না। আর যখন টাকা-পয়সা মানুষের থাকে, তখন টাকা সেভ করা বা জমানো অনেক প্রয়োজন। বিশেষ করে দুর্দিনের জন্য হলেও টাকা জমানো প্রয়োজন।

কিভাবে টাকা জমানো যায়

১. বাজার খরচের হিসাব রাখা: এক মাসের বাজার খরচ একটি খাতায় লিখে নিন এবং যেটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই কিনুন। ২. বাজে খরচ বন্ধ করা: বাজে খরচ করা বন্ধ করুন এবং চেষ্টা করুন যেখানেই যতটুকু টাকা নিয়ে যাবেন বাজার করার জন্য বা শপিং করার জন্য, একটু বার্গেনিং করে কিছু টাকা বাঁচান। ৩. খালি পেটে বাজারে না যাওয়া: বাজারে যাওয়ার আগে বাসা থেকে পেট ভরে খেয়ে যান। একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ক্ষুধার্ত অবস্থায় থাকলে অপ্রত্যাশিত জিনিস কেনা বেশি হয়ে যায়। ৪. সেভিংসের টাকা আলাদা করে রাখা: আপনি কতটুকু সেভ করতে পারবেন তা হিসাব করে সেটুকু টাকা আগেই আলাদা করে রাখুন। আর টাকা বাড়ানোর জন্য শুধু সেভ করলেই হবে না, এ টাকা গুলো কোন কাজে লাগালে আপনার টাকা বৃদ্ধি পাবে, সেই চিন্তাও করতে হবে।

এই জমানো ব্যাপারটা যেকোনো বয়সে হতে পারে। আপনি ছোটবেলা থেকে শুরু করে, স্কুল লাইফ, কলেজ লাইফ, ভার্সিটি লাইফ, জব অবস্থায়, যেকোনো সময় টাকা জমানো শুরু করতে পারেন। ধন্যবাদ

বিজ্ঞাপন

ছবি: Image by snowing on Freepik


Discover more from অভিযাত্রী

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

আশরাফুন নেছা

কন্টেন্ট রাইটার, টিম দ্য ব্যাকস্পেস

Leave a Reply

বিজ্ঞাপন
Back to top button

Discover more from অভিযাত্রী

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading