আজকের রেসিপি ঘরোয়া ভাবে মাটির চুলায় কেক বানানো। আপনারা জানতে পারবেন আমাদের প্রত্যেকের বাসায় এসব জিনিস থাকে সে সব জিনিস দিয়েই আজকের কেক বানানো। প্রথমে বলি উপাদান সমূহের কথা।
আমাদের লাগবে ডিম, ময়দা, চিনি, ব্যবহারের তেল, কর্নফ্লাওয়ার, বেকিং পাউডার, এসব জিনিস সচরাচর কমবেশি সবার বাসায় থেকে থাকে। আর যাদের বাসায় বাচ্চা থাকে তাদের তো অবশ্যই থাকবে। কারণ বাচ্চারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বায়না করে থাকে এসব দিয়ে তাদের নাস্তা বানিয়ে দেওয়ার জন্য।
প্রথমে বলি ডিমের কথা আমাদের দুইটা ডিম রাখবে ডিমগুলো ফ্রিজ থেকে বের করে ব্যবহার করা যাবে না। ব্যবহারের কমপক্ষে ৩০ মিনিট বা তার বেশি সময় বের করে রাখতে হবে পুরোপুরি ঠান্ডা করার জন্য।
প্রথমে আমরা দুইটা ডিম একটি পাত্রে নেব। ডিম গুলোর কুসুম আলাদা করবো এবং সাদা অংশ আলাদা করব। সাদা অংশটা আমাদের ফোম তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হবে। কেকের জন্য ফোম তৈরি করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ফোন তৈরি করতে একটু কষ্ট হয়। যদি হ্যান্ড ব্লেন্ডার হয় তাহলে অনেক সহজে ফোমটা তৈরি করা যায়। আর যদি চামচের সাহায্যে ফোমটা তৈরি করি তাহলে একটু কষ্টকর হয়ে যায়।
যদি একটু কষ্ট করে ফোমটা তৈরি করতে পারি তাহলে কেকটা অনেক সুন্দর হয়। আমরা ফোম তৈরি করতে না চাই তাহলে আমরা যে বাটারটা তৈরি করব তা অনেকক্ষণ পর্যন্ত চামচের সাহায্যে ফোটাতে হবে। এরপর আমরা আলাদা করে রাখা কুসুমটির সঙ্গে এক কাপ পরিমাণ চিনি দেবো।
চিনি আপনি এমনিও দিতে পারেন বা পিষে দিতে পারেন তারপর দিবেন দুই কাপ পরিমাণ ময়দা, এক কাপ তেল, হাফ চামচ বেকিং পাউডার, হাফ চামচ কর্নফ্লাওয়ার। কর্নফ্লাওয়ার আপনি চাইলে দিতে পারেন না দিলেও সমস্যা নেই। এরপর মিনি প্যাক দুধ, দুধটাও আপনি চাইলে দিতে পারেন না দিলেও সমস্যা নেই, কিন্তু গুড়া দুধ দিলে কেকের টেস্টটা ভালো হয়।
এরপর সমস্ত উপাদান গুলো ভালোভাবে মিশ্রণ করতে হবে। এর মধ্যে যদি কারো ডিমের গন্ধ ভালো না লাগে তাহলে ভ্যানিল ফ্লেভার দিতে পারেন যদি কারো কাছে ভ্যানিল ফ্লেভার না থাকে তাহলে সে সাদা এলাদের বিচিগুলো গুড়া করে দিতে পারেন। তাও যদি না হয় তাহলে অল্প পরিমাণ লেবুর রস দিতে পারেন। লেবুর রস দিলে ডিমের যে গন্ধটা সেটা আর লাগবেনা, টেস্টটাও ভালো আসে।
এসব উপাদান মিশ্রণ করে আমরা যে ফোম তৈরি করে রেখেছি তাতে ঐ বাটারটা আলতো হাতে মিশ্রণ করতে হবে। আমরা ফোমটা নিয়ে বাটারটাতে আলতো হাতে একদিক থেকে নেড়ে বাটারটা তৈরি করবো।
এরপর একটি পাত্র নিব যে পাত্রের মুখটা একটু বড় এতে আপনি আপনার বাসার ছাসপেন, বা টিফিন বক্স বা বড় মুখ ওয়ালা পাতিল এসব ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে পাত্র তে চারিদিকে ভালোভাবে তেল ব্রাশ করে নিতে হবে। হাত দিয়েও তেল আপনারা মেখে নিতে পারেন তারপর সাদা কাগজ যেমন খাতার পৃষ্ঠা সেটা সাদা হতে হবে পৃষ্ঠাটা পাত্রের মাপ অনুযায়ী সুন্দর করে কেটে নিবেন।
এরপর আলতো হাতে পাত্রের নিচে চারদিকে ভালোভাবে সেট করে দিবেন। সেট করার পর আমরা যে বাটারটা তৈরি করে রাখছি সেটা আস্তে করে ঢেলে দিবেন। এরপর ব্যাটারটা ঢালা হয়ে গেলে পাত্রটা আস্তে আস্তে ঝাঁকিয়ে নিবেন কারণ নিচে কোন ফাঁকা থাকলে তা পূরন হয়ে যাবে। আপনারা একটু উপরে উঠে নিচে ফেলতে পারেন।
এরকম ২-৩ বার করলে ফাঁকা জায়গাগুলো পূরন হয়ে যাবে। এরপর একটা টুথপিক বা কোন কাঠির সাহায্যে বাটারটার মধ্যে হালকা করে মেরে ছেড়ে দিতে পারেন তাহলে ব্যাটারটার ভিতর ভুটি গুলো থাকবে না। এরপর আমরা মাটির চুলাতে একটি পাত্র বসাবো সেটা কড়াই হলে ভালো হয় তাতে বালি বা লবণ দিতে হবে তার ওপর একটি স্ট্যান্ড বসাতে হবে বালি বা লবণ দশ মিনিট বেশি তাপে গরম করে নিত্তে হবে।
এরপর ট্যানের উপর আমরা কেকের পাত্রটা বসাবো তারপর ভালোভাবে উপরে একটি ঢাকনা দিয়ে চাপ দিয়ে বন্ধ করে রাখতে হবে যেন ভাবটা ভিতর থেকে না বের হতে পারে এরপর মিডিয়াম তাপ ৪০ থেকে ৫০ মিনিট তাপ দিয়ে নিতে হবে। তারপর আমরা ঢাকনা খুলে দেখব কেকটা হয়েছে কিনা।
কেকটা ফুলে উঠবে এবং চারদিকে হালকা ব্রাউন কালার হয়ে আসবে এভাবেও আমরা বুঝতে পারি কেকটা হয়েছে। তা না হলে একটি টুথপিকটি কেকের মাছ বরাবর ঢুকিয়ে দিব টুথপিকটি গায়ে যদি কিছু না লাগে তাহলে আমরা বুঝতে পারব যে কেকটা হয়েছে। এরপর কোন কাপড়ের সাহায্যে গরম পাত্রটি নামাবো এবং ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।
ঠান্ডা হয়ে গেলে আমরা একটি চাকর সাহায্যে চারদিকে খুলে নিব তারপর টি-প্লেটে উপর করে নিয়ে আলতো হাতে কেকটি ঢেলে নেব এরপর নিয়ে পিছনের অংশটা একটু কালো কই গেলে কেটে ফেলবো।
তারপর আপনাদের ইচ্ছামত সাইজ করে কেটে নিতে পারেন। কেকটা কাটার পর দেখবেন চাপ দিয়ে ধরে আবার যদি ছেড়ে দেন তাহলে আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। তাহলে বুঝবেন একটি পার্ফেক্ট হয়েছে। আপনারা চেষ্টা করলে অনেক সুন্দর ভাবে কেক তৈরি করতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ
ছবি: Image by azerbaijan_stockers on Freepik
Discover more from অভিযাত্রী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.