ইসলাম ধর্ম

সন্ত্রাসবাদের ছায়ায় ইসলামের অনুশীলন: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট

বিজ্ঞাপন

Disclaimer: The opinions and analysis presented in this article are based on the author’s own research and understanding. The purpose of this article is to raise awareness about the relationship between terrorism (সন্ত্রাসবাদ) and religion, and to promote social tolerance and peace. The events and organizations mentioned in this article are based on actual incidents and groups; however, the analysis and evaluation reflect the author’s personal perspective. Readers are encouraged to verify the information in this article with their own judgment and to seek information from other reliable sources.

‘সন্ত্রাসবাদ (Terrorism)’ দ্বারা কোন নির্দিষ্ট ধর্ম বা জনগোষ্ঠী বা কোন বিশেষ কমিউনিটি কে বুঝায় না। কিন্তু বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ এক ধরণের ‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে পরিচিত। ইসলাম ধর্মের নাম করে এখানে বহুবার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানো হয়েছে। যদিও ইসলাম ধর্ম এই ধরণের হত্যাযজ্ঞ বা ভয় প্রদর্শন করা সমর্থন করে না তবুও এক ধরণের মগজ ধোলাই বিদ্যমান এবং সেখান থেকেই একের অধিক সংগঠন এখানে সক্রিয় ছিলো; হয়তো আজও আছে।

আমি জন্মগতভাবে একজন ইসলাম ধর্মের অনুসারী কিন্তু প্রাকটিসিং মুসলিম নই এবং এটা নিয়ে আমি মোটেই গর্ব করি না, গর্ব করার মতন এখানে কিছুই নেই। কিন্তু ইসলাম ধর্মের নাম করে ঘটিত সমস্ত ‘সন্ত্রাসবাদ (Terrorism)’ কে নিন্দা জানাই এবং একই সাথে সাচ্চা মুসলিমদের ধর্ম পালনে এই অভিশাপ বহন করা থেকে মুক্তি চাই।

কারণ পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে, যে ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের অনুসারী সে হয়তো সন্ত্রাসবাদী নয় কিন্তু তার মধ্যে সন্ত্রাসবাদী হওয়ার ‘পটেনশিয়ালিটি (সম্ভাবনা)’ বিদ্যমান। এই ধরণের সরলীকরণ একজন সাচ্চা মুসলিমের জন্য ধর্ম পালনে ব্যাপক সমস্যার দেখা দিচ্ছে।

এই প্রবন্ধের আরো সামনে যাওয়ার আগে আমি একটি ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাই যে, “যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন যে ইসলাম ধর্ম সন্ত্রাসবাদ প্রচার করে, সন্ত্রাসবাদে উৎসাহিত করে, সন্ত্রাসবাদী হওয়ায় পুরষ্কার দেয় তাহলে আমি আমার ধর্ম ছেড়ে দেবো (শর্ত হচ্ছে তা পবিত্র আল কোরআন মোতাবেক হতে হবে)।”

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে বিদ্যমান সম্ভাব্য সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী/জঙ্গী সংগঠনের তালিকা,

১. জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশ (JMB)
২. হরকাত-উল-জিহাদ আল-ইসলামি (HuJI)
৩. আল-কায়েদা এবং এর সাথে যুক্ত সংশ্লিষ্ট গ্রুপ সমূহ।
৪. ইসলামিক স্টেট (IS)
৫. হিজবুত তাহরীর সহ বাংলাদেশে মোট ৪০টিরও বেশি জঙ্গি সংগঠন রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে এসব জঙ্গি সংগঠন একাধিক সন্ত্রাসবাদী কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলো বলেও ধারণা করা হয়। আমি আবারও লিখছি, “ধারণা করা হয়।”

বাংলাদেশে ১৯৭১ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদী হামলার বিশেষ কোন তথ্য পাওয়া যায় না, কারণ এই সময়কালে সন্ত্রাসবাদ একটি প্রধান সমস্যা হিসেবে উঠে আসেনি। তবে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক সংঘাত এবং সহিংসতা ঘটেছে, যা পরবর্তীতে সন্ত্রাসবাদের উদ্ভবে অবদান রেখেছে।

১৯৮০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী হামলার বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য প্রদান করা কঠিন, কারণ এই সময়কালের অনেক ঘটনা ঐতিহাসিক দলিলে সীমিত বা অপ্রকাশিত থাকতে পারে। তবে, উপলব্ধ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ইসলামিস্ট সন্ত্রাসবাদের উত্থান মূলত ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে দেখা যায়, যখন প্রায় ৩,০০০ বাংলাদেশি আফগানিস্তানে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি সমর্থিত বিরোধী-সোভিয়েত জিহাদে।

এই সময়কালে বাংলাদেশে কিছু সন্ত্রাসবাদী গ্রুপের উত্থান ঘটে, যারা পরবর্তীতে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়। এই গ্রুপগুলির মধ্যে হরকাত-উল-জিহাদ আল-ইসলামি (HuJI) এবং জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশ (JMB) অন্যতম। এই গ্রুপগুলি বাংলাদেশে শরিয়া আইন অনুযায়ী শাসন করা বা আলাদা ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে আসছে।

বিশেষ করে, ১৯৯৯ সালে হরকাত-উল-জিহাদ আল-ইসলামি বাংলাদেশ কর্তৃক শামসুর রহমানের উপর হত্যাচেষ্টা, যশোরের বাংলাদেশ উদীচি শিল্পীগোষ্ঠীতে বোমা হামলা এবং মোহিবুর রহমান মানিকের বাড়িতে বোমা হামলা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

এই সময়কালের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য হামলাগুলির মধ্যে রয়েছে ২০০১ সালের বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির র‌্যালিতে বোমা হামলা, ২০০২ সালের ময়মনসিংহের সিনেমা হলে সমন্বিত বোমা হামলা, এবং ২০০৩ সালের টাঙ্গাইলের মেলায় বোমা বিস্ফোরণ।

বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী হামলার নির্দিষ্ট সাল এবং জড়িত সংগঠনের নাম নিম্নরূপ:

★ ১৯৯৯ সাল
– ১৮ জানুয়ারি: হরকাত-উল জিহাদ আল-ইসলামি বাংলাদেশ (HuJI-B) শামসুর রহমানের উপর হত্যাচেষ্টা চালায়।
– ৬ মার্চ: যশোরের বাংলাদেশ উদীচি শিল্পীগোষ্ঠীতে বোমা হামলা, ১০ জন নিহত।
– ১৫ মার্চ: মোহিবুর রহমান মানিকের বাড়িতে বোমা হামলা, ২ জন নিহত।

★ ২০০১ সাল
– ২০ জানুয়ারি: কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশের র‌্যালিতে বোমা হামলা, ৫ জন নিহত এবং ৭০ জন আহত।
– ১৪ এপ্রিল: হরকাত-উল জিহাদ আল-ইসলামির বোমা হামলায় ১০ জন নিহত।

★ ২০০২ সাল
– ৬ ডিসেম্বর: ময়মনসিংহের সিনেমা হলে সমন্বিত বোমা হামলা, ২৭ জন নিহত।

★ ২০০৩ সাল
– ১৭ জানুয়ারি: টাঙ্গাইলের মেলায় বোমা বিস্ফোরণ।

বিজ্ঞাপন

★ ২০১৬ সাল
– ১-২ জুলাই: ঢাকার হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা, ২২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত। ইসলামিক স্টেট দায় স্বীকার করে।

★ ২০১৭ সাল
– ২৫ মার্চ: দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় আত্মঘাতী বোমা হামলা, ৪ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ২ জন পুলিশ অফিসার নিহত, প্রায় ৪০ জন আহত। আইএসআইএল দায় স্বীকার করে।

উল্লেখ্য, এই তথ্যগুলো আরো বিশ্বস্ত উৎস থেকে যাচাই করা জরুরী কারণ রেফারেন্স সমূহ কিছুটা দূর্বল। এছাড়াও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আরো অনেক তথ্য পাওয়া যায় কিন্তু সেসবের বেশিরভাগই গোপন থেকে গেছে। জড়িতদের বিচার হয়নি বা অজানা কারণে তাদেরকে ধরাও হয় নাই।

রেফারেন্স সমূহ

(১) The rise of Political Islam and Islamist Terrorism in Bangladesh
https://www.efsas.org/publications/study-papers/the-rise-of-political-islam-and-islamist-terrorism-in-bangladesh/

(২) Terrorism in Bangladesh – Wikipedia
https://en.wikipedia.org/wiki/Terrorism_in_Bangladesh

বিজ্ঞাপন

(৩) Category : Terrorist incidents in Bangladesh in the 1990s
https://en.wikipedia.org/wiki/Category:Terrorist_incidents_in_Bangladesh_in_the_1990s

(৪) Category : Terrorist incidents in Bangladesh in the 2000s
https://en.wikipedia.org/wiki/Category:Terrorist_incidents_in_Bangladesh_in_the_2000s

(৫) After the Dhaka Attack: Countering Terrorism in Bangladesh
https://thediplomat.com/2016/07/after-the-dhaka-attack-countering-terrorism-in-bangladesh/

(৬) Terrorism in Bangladesh – Wikipedia
https://en.wikipedia.org/wiki/Terrorism_in_Bangladesh

(৭) July 2016 Dhaka attack – Wikipedia
https://en.wikipedia.org/wiki/July_2016_Dhaka_attack

বিজ্ঞাপন

(৮) Major incidents of terrorist violence in Bangladesh since 1996 – SATP
https://satp.org/satporgtp/countries/bangladesh/database/majorincidents.htm

(৯) Category:Terrorism in Bangladesh – Wikipedia
https://en.wikipedia.org/wiki/Category:Terrorism_in_Bangladesh


Discover more from অভিযাত্রী

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

মেহেদি হাসান

পরিচয়: আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। আমি একজন বহুমুখী ব্যক্তি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমার পেশাগত জীবন বিস্তৃত। লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, অডিও ও ভিডিও সম্পাদক, ছবি সম্পাদক, ইউটিউবার এবং নাট্য পরিচালক হিসেবে কাজ করি। মাইক্রোসফটের একজন ডেভেলপার এবং অ্যাপ ডেভেলপারও আমি।

Leave a Reply

বিজ্ঞাপন
Back to top button

Discover more from অভিযাত্রী

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading