ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য: একটি বিশ্লেষণ
বুলডোজার জাস্টিস এবং ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস
ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে পরিচিত, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন ঘটনা এই ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্ন তোলে। এই দেশ তার প্রধান এবং সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু মুসলিমদের সাথে নিশ্চয় ভালো ব্যবহার দেখান। আপনি যদি সেরা সেক্যুলার দেশগুলোর তালিকার দিকে তাকান তাহলে ভারত থাকবে প্রথম সারির দিকে। ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত এই তিন দেশ সংখ্যালঘুদের প্রতি দীর্ঘদিন অতি সদয় ব্যবহার দেখিয়ে চলেছেন। ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে আলোচনার আগে আমাদের উচিত ভারত তার সংখ্যালঘুদের প্রতি কেমন আচরণ করছেন তা তলিয়ে দেখা। বিশেষ করে, যখন একটি বিশ্বগুরু খ্যাত আগামীর সুপার পাওয়ার ‘ভারত’ বাংলাদেশকে আজকাল প্রায় রাত-দিন তাদের মতন সেক্যুলার দেশ হবার নসিহত দিচ্ছেন। আরো মজার বিষয় হচ্ছে, এই দেশের মিডিয়া পর্যন্ত আজকাল বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে খুবই চিন্তিত বলে মনে হচ্ছে।
তাজমহল নাকি তেজো মহালয়?
রজনীশ সিং নামের একজন ব্যক্তি, যিনি বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ, তাজমহলের প্রকৃত ইতিহাস অনুসন্ধানের জন্য একটি মামলা দায়ের করেন। তার দাবি, তাজমহল আসলে একটি প্রাচীন শিবমন্দির ‘তেজো মহালয়’ এর ওপর নির্মিত। তিনি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে (এএসআই) তাজমহলের ২২টি বন্ধ প্রকোষ্ঠ খুলে পরীক্ষা করার আবেদন জানান, যাতে করে এর আসল ইতিহাস জানা যায়।
অবশ্য তাজমহল নিয়ে এই ঘটনা ভারতে প্রথম নয়। প্রায় প্রায় তাজমহল নিয়ে নানান অভিযোগে মুখিয়ে থাকেন ভারতের বিজেপির বড় বড় নেতারা এবং তাদের ধারণা অনুযায়ী মোগল সম্রাট শাহজাহান নিশ্চয় কোনো মন্দিরের উপর এই তাজমহল বানিয়ে ছিলেন। আমি এই চিন্তার সাথে পুরোপুরি একমত হওয়া সত্ত্বেও এই দ্বন্দের এক পর্যায়ে ভারতের এএসআই খুবই বিরুক্ত হয়ে পড়ে এবং এই মামলা আমলে নেন নাই।
বাবরি মসজিদ – রাম মন্দির বিতর্ক
২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন করা হয়েছে। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই বিতর্ক ও দ্বন্দের ফলে সেদেশে প্রায় ২,০০০ থেকে ৩,০০০ জন মানুষ মারা যান যাদের বেশিরভাগ মুসলিম ছিলেন। ভারতের সংবিধান এবং আইন অনুযায়ী, ধর্মীয় স্থানগুলির সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হয়।
১৯৯১ সালের ‘প্লেসেস অফ ওয়ারশিপ (স্পেশাল প্রভিশনস) অ্যাক্ট’ অনুযায়ী, ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সালের আগে যে ধর্মীয় স্থাপনার যে অবস্থান ছিল, তা পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু এদেশের বর্তমান চিত্র এই আইনের সাথে যায় বলে মনে হচ্ছে না। কিছু গোষ্ঠীর ধারণা (বিশেষ করে বিজেপির), এমন আইন অসাংবিধানিক বলে অভিযোগ রয়েছে।
জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্ক
ভারতের কাশীতে জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্ত্বরে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সার্ভে নিয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদের পশ্চিম প্রান্তে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছিল, যা নিয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানায়। মসজিদ কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল যে, এই সার্ভে তাড়াহুড়ো করে করা হচ্ছে এবং এর পেছনে কোনো বৈধ কারণ নেই। মসজিদ কর্তৃপক্ষ সেদেশের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে এবং প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই. চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সার্ভে স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। এই স্থগিতাদেশের মাধ্যমে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আপিল করার সময় দেওয়া হয়।
এই বিতর্কের মূল কারণ হলো, কিছু হিন্দু গোষ্ঠী দাবি করেন যে, জ্ঞানবাপী মসজিদের স্থানে আগে একটি হিন্দু মন্দির ছিল। ২০২১ সালে, একদল হিন্দু মহিলা মসজিদের ভেতরে হিন্দু দেবদেবীদের পূজা করার অনুমতি চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হোন, যা এই বিতর্ককে আরও উস্কে দেয়।
অন্যান্য মসজিদ বিতর্ক
ভারতে জ্ঞানবাপী মসজিদ ছাড়াও কয়েকটি মসজিদ নিয়ে বিতর্ক এবং আইনি লড়াই হয়েছে বা চলছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু মসজিদ হলো:
মথুরার শাহী ঈদগাহ মসজিদ
এখানে দাবি করা হয়েছে যে, মসজিদটি শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমির ওপর নির্মিত হয়েছে। এই নিয়ে সেদেশের আদালতে মামলা চলছে।
কুতুব মিনার কমপ্লেক্স
দিল্লির কুতুব মিনার কমপ্লেক্সে অবস্থিত কুওয়াত-উল-ইসলাম মসজিদ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিছু হিন্দু গোষ্ঠী দাবি করেছে যে, এটি একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের উপর নির্মিত।
গোলকুন্ডা ফোর্ট মসজিদ
হায়দ্রাবাদের গোলকুন্ডা ফোর্টে অবস্থিত মসজিদটি নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। কিছু গোষ্ঠী দাবি করেছেন যে, এটি একটি হিন্দু মন্দিরের উপর নির্মিত।
জুমা মসজিদ
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় জলগাঁও জেলার এরন্দোল তালুকে এই মসজিদ প্রায় ৮০০ বছরের পুরোনো। বর্তমানে এটি সেদেশের ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে নিবন্ধিত সম্পত্তি। প্রাচীন এই মসজিদে এখনো মানুষ নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। তবে এত বছর পর মসজিদ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। জলগাঁওয়ের কালেক্টর আমান মিত্তালের কাছে চলতি বছরের মে মাসে পান্ডবওয়াদা সংগ্রাম সমিতি নামের স্থানীয় অনিবন্ধিত একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে। এই সংগঠনের মতে, মসজিদটি একটি হিন্দু উপাসনালয়ের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে।
আজমির শরিফ বিতর্ক
বাংলাদেশ ও ইসকন প্রসঙ্গ নিয়ে যখন ভারতীয় মিডিয়া একের পর এক কভারেজ আমাদের সামনে নিয়ে আনছে ঠিক সেসময় রাজস্থানে অবস্থিত আজমির শরিফ নিয়ে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দু সেনা নামক একটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন দাবি করেছে যে, আজমির শরিফের নিচে একটি প্রাচীন শিবমন্দির ছিল। এই দাবির ভিত্তিতে তারা আদালতে একটি পিটিশন দায়ের করেছে।
শাহী জামা মসজিদ বিতর্ক
বাংলাদেশ ও ইসকন প্রসঙ্গে যখন ভারতীয় মিডিয়া এত এত কভারেজ সামনে আনছে ঠিক তখন উত্তরপ্রদেশের সম্ভল জেলার শাহী জামা মসজিদ নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কে ২৪ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে সহিংসতা ঘটে। মসজিদে সমীক্ষা চালানোর সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যার ফলে সংঘর্ষে ছয়জন মুসলিম নিহত হন এবং ৩০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য আহত হন। বিতর্কের মূল কারণ হলো, কিছু হিন্দু গোষ্ঠী দাবি করেছে যে, মসজিদটি একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের উপর নির্মিত। বাংলাদেশ ও ইসকন প্রসঙ্গেও একজন মারা গেছেন। অবশ্য তিনিও হিন্দু নন, একজন মুসলিম।
বুলডোজার জাস্টিস এবং ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস
বুলডোজার জাস্টিসের মাধ্যমে অনেক মুসলিমদের ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২২ সালে প্রয়াগরাজ, সাহারানপুর, এবং কানপুরে বেশ কয়েকটি মুসলিমদের ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। এছাড়াও, দিল্লি এবং মধ্যপ্রদেশে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এই প্রক্রিয়ায় কতগুলো ঘরবাড়ি ভাঙা হয়েছে তার সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শত শত মুসলিমদের ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে।
শুধু মুসলিমদের বাড়ি নয়, কিছু মসজিদ এবং ধর্মীয় স্থাপনাও বুলডোজার জাস্টিসের শিকার হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে ৬০০ বছরের পুরোনো আকঞ্জি মসজিদ বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। এই মসজিদটি সংরক্ষিত বন থেকে অবৈধ অবকাঠামো অপসারণের অংশ হিসেবে ধ্বংস করা হয়েছিল।
অজানা কারণে সকল অবৈধ স্থাপনা শুধু সেদেশের মুসলিমদের মধ্যে দেখা যায়! এই ইসলাম ধর্মের লোকেরা ভারতে এত এত অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছেন মানে আশ্চর্য হতে হয়! কীভাবে পারেন আপনারা? আসিফ নজরুল স্যারের মত আমি ‘অবাক’ হয়ে যাই!
লিঞ্চিং
ভারতে লিঞ্চিং বলতে উত্তেজিত জনতার দ্বারা বিচার বহির্ভূত হত্যাকে বোধায়। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে লিঞ্চিং এর ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ১০০টিরও বেশি লিঞ্চিং এর ঘটনা ঘটেছে এবং এতে প্রায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। এই ঘটনাগুলোর বেশিরভাগই গরু রক্ষার নামে সংঘটিত হয়েছে এবং এতে প্রধানত মুসলিম এবং দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লিঞ্চিং সাধারণত গুজব বা সন্দেহের ভিত্তিতে সংঘটিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, গরু পাচার বা গোহত্যার অভিযোগে অনেক লিঞ্চিং হয়েছে। এছাড়া, ধর্মীয় উত্তেজনা বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও লিঞ্চিং ঘটেছে। অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো গুজবের ভিত্তিতে জনতা উত্তেজিত হয়ে লিঞ্চিং ঘটায়। অনেক লিঞ্চিং এর ঘটনায় ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগান ব্যবহার করা হয়েছে। এই শ্লোগানটি অনেক সময় আক্রমণের সময় ব্যবহার করা হয়েছে, যা ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে লিঞ্চিং এর ঘটনায় প্রায় ৫০ জনেরও বেশি মুসলিম মারা গেছেন। এই ঘটনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো মোহাম্মদ আখলাক, পেহলু খান, রাখবর খান, এবং তাবরেজ আনসারি।
নামাজ নিয়ে বিতর্ক
ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে নামাজ নিয়ে বেশ কিছু আপত্তি ও বিতর্ক দেখা গেছে। বিশেষ করে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা ধর্মীয় সংবেদনশীলতা এবং সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। কিছু স্থানে, যেমন গুরগাঁও শহরে, প্রকাশ্যে নামাজ আদায়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া, আসাম বিধানসভায় জুম্মার নামাজের জন্য ২ ঘণ্টার বিরতির নিয়ম বাতিল করা হয়েছে, যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
সীমান্ত হত্যা
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন রয়েছে। ২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সীমান্তে প্রায় ৩০০ জন বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন। ফেলানী হত্যার লোমহর্ষক দৃশ্য আজও চোখে ভাসে।
আমি নিয়মিত গণমাধ্যমের বিভিন্ন খবরগুলো দেখি। আজকাল নিয়মিত আতঙ্কে থাকি। ইসলাম ধর্মের মানুষগুলো এত এত খারাপ হতে পারে তা জানতাম না। ধর্মনিরপেক্ষ এই দেশ একটি অসাধারণ সেক্যুলারিজম চর্চা করছেন। কিছু কিছু আব্দুল আব্বাসের বেটা/বেটির কথা যদি মানেন, তাহলে আপনাকে ভারত থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, “ঠিক কি বিষয়ে শেখবো? লিঞ্চিং দিয়ে কি আমরা শুরু করবো?” নাকি “খোদাই কর্মসূচি?” যেটাই হোক, তাড়াতাড়ি বলুন আমাদের হাতে আর কোনো কাজ নাই তো, এরকম একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র কায়েমে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। অবশ্য আমার হাতে বিশাল তালিকা আছে। এতেও যদি আপনারা সন্তুষ্ট না হোন তাহলে আরো দীর্ঘ তালিকা ও সুনির্দিষ্ট নাম ও তারিখ উল্লেখ করতেও রাজি। শুধুমাত্র, আমার মধ্যে একটি সুপারফিশিয়াল গিল্ট প্রবেশ যেন না করতে পারেন যে, “আমি এদেশের সংখ্যালঘুদের কাছের/নিকট ভাবতে পারি না!”
ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য: ঘটনা ও প্রভাব
ঘটনা | তারিখ | স্থান | বিবরণ | প্রভাব |
---|---|---|---|---|
তাজমহল বিতর্ক | ২০২৩ | আগ্রা | রজনীশ সিং দাবি করেন যে, তাজমহল একটি প্রাচীন শিবমন্দিরের উপর নির্মিত। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
বাবরি মসজিদ বিতর্ক | ২০২৪ | অযোধ্যা | রাম মন্দিরের উদ্বোধন করা হয়, বিতর্কের ফলে ২,০০০ থেকে ৩,০০০ মানুষ মারা যায়। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্ক | ২০২৩ | কাশী | প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সার্ভে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
মথুরার শাহী ঈদগাহ মসজিদ বিতর্ক | ২০২৩ | মথুরা | দাবি করা হয় যে, মসজিদটি শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমির উপর নির্মিত। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
কুতুব মিনার কমপ্লেক্স বিতর্ক | ২০২৩ | দিল্লি | দাবি করা হয় যে, মসজিদটি একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের উপর নির্মিত। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
গোলকুন্ডা ফোর্ট মসজিদ বিতর্ক | ২০২৩ | হায়দ্রাবাদ | দাবি করা হয় যে, মসজিদটি একটি হিন্দু মন্দিরের উপর নির্মিত। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
জুমা মসজিদ বিতর্ক | ২০২৩ | জলগাঁও | দাবি করা হয় যে, মসজিদটি একটি হিন্দু উপাসনালয়ের উপর নির্মিত। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
আজমির শরিফ বিতর্ক | ২০২৩ | রাজস্থান | দাবি করা হয় যে, আজমির শরিফের নিচে একটি প্রাচীন শিবমন্দির ছিল। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
শাহী জামা মসজিদ বিতর্ক | ২০২৪ | সম্ভল | সমীক্ষা চালানোর সময় সহিংসতা ঘটে, ৬ জন মুসলিম নিহত হন। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
বুলডোজার জাস্টিস | ২০২২ | প্রয়াগরাজ, সাহারানপুর, কানপুর | মুসলিমদের ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
লিঞ্চিং | ২০১৪-২০১৯ | ভারত | ১০০টিরও বেশি লিঞ্চিং ঘটনা, ৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
নামাজ নিয়ে বিতর্ক | ২০২৩ | গুরগাঁও, আসাম | নামাজ আদায়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
সীমান্ত হত্যা | ২০১৪-২০২৩ | ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত | প্রায় ৩০০ জন বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন। | ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ে, সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি হয়। |
উপসংহার
ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের ঘটনাগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে পরিণত হয়েছে। এই ঘটনাগুলো ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়িয়েছে এবং সামাজিক সংঘাত সৃষ্টি করেছে। সরকার এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়েছে এই সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য। ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং সমতার প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করা এই সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
Discover more from অভিযাত্রী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.