শূন্য পাস মাদ্রাসাগুলোর এমপিও বন্ধের চিন্তা

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় শূন্য পাসসহ ৪৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি মাদ্রাসা; এর মধ্যে নয়জন এমপিওভুক্ত টাঙ্গাইলের সখীপুরের ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসার ২১ শিক্ষার্থী এবারের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিলেও কেউ পাস করতে পারেনি। তবে এমপিওভুক্ত এ মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে সরকারের কাছ থেকে মূল বেতনের শতভাগ ও কিছু ভাতা পান।

Feb 12, 2024 - 09:30
Feb 12, 2024 - 16:08
 0  33
শূন্য পাস মাদ্রাসাগুলোর এমপিও বন্ধের চিন্তা
শূন্য পাস মাদ্রাসাগুলোর এমপিও বন্ধের চিন্তা

প্রথম প্রকাশ: ১৬ আগস্ট, ২০২৩

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় শূন্য পাসসহ ৪৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি মাদ্রাসা; এর মধ্যে নয়জন এমপিওভুক্ত টাঙ্গাইলের সখীপুরের ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসার ২১ শিক্ষার্থী এবারের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিলেও কেউ পাস করতে পারেনি। তবে এমপিওভুক্ত এ মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে সরকারের কাছ থেকে মূল বেতনের শতভাগ ও কিছু ভাতা পানমাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার ৪১টি মাদ্রাসার একজনও পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। এর মধ্যে নয়টি মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত, যার অর্থ তাদের শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের মূল বেতনের সাথে সরকার থেকে কিছু ভাতা পান


এখন এই নয়টি মাদ্রাসার এমপিওভুক্তি বন্ধের পরিকল্পনা করছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। সে আলোকে ওই মাদ্রাসার এমপিওভুক্তি কেন বন্ধ করা হবে না, তা জানতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যারা এমপিওভুক্ত নয় তাদেরও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবেজানতে চাওয়া হইলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. জাকির হোসেন বলেন, “শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে


এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে ২৮ জুলাই। এবার সারাদেশে ২৯ হাজার ৭১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা দিয়েছে ২০ লক্ষ ৪১ হাজার ৪৫০ জন। পাস করেছে ১৬ লক্ষ ৪১ হাজার ১৪০ জন এবার মোট ৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করতে পারেনি। এর মধ্যে ৪১টি মাদ্রাসা। গত বছরও ৪১টি মাদ্রাসা থেকে একজন পরীক্ষার্থী পাস করেনি। টি মাদ্রাসা থেকেও সবাই ব্যর্থ হয়েছে


মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে শূন্য পাসের মধ্যে নওগাঁর পত্নীতলার চক ফরিদ মেহেরুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসার ১৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় পাস করেনি। বড় বিদিরপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০ জন এবং একই উপজেলার হোলাকান্দর সাবেদ আলী দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৯ জন পরীক্ষা দিয়েছে কিন্তু কেউ পাস করেনি


এর মধ্যে হালকান্দার সাবেদ আলী দাখিল মাদ্রাসাকে ২০০০ সালে এমপিওভুক্ত করা হয়। অর্থাৎ তখন থেকে মাদ্রাসার শিক্ষকরা বেতনের একটি অংশ সরকার থেকে পানমুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে হোলাকান্দর সাবেদ আলী দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমান দাবি করেন, “করোনার পরও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত আনা যাচ্ছে না তার মতে এটাই মূল কারণ


ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈল উপজেলা রথের আরএফএস দাখিল মাদ্রাসার ১৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিলেও সবাই ফেল করেছে। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রে সমস্যা রয়েছে বলে দাবি করেন মাদ্রাসা সুপার বেলায়েত হোসেন। বিষয়টি জানিয়ে বোর্ডে আবেদন করেছেন তারা। মাদ্রাসাটি ২০০১ সালে এমপিওভুক্ত ছিল

এ ছাড়া যশোরের মণিরামপুরের হায়াতপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৫ জন ও একই উপজেলার শমসেরবাগ দাখিল মাদ্রাসার সাতজন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমানুল্যাপুর দারুচ্ছলাম মহিলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৫ জন এবং মঈনপুর আলীতলা দাখিল মাদ্রাসার ১২ জন পরীক্ষায় পাস করেননি। 


এদিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দুটি স্কুল থেকে কেউ পাস করেনি। এর মধ্যে একটি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের পূর্ব লাখন্দা জিরাতলী উচ্চ বিদ্যালয়। আরেকটি হলো টাঙ্গাইলের সখীপুরের কালিয়া আড়াইপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার বলেন, তাদের বোর্ডের অধীনে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ফোন করে কারণ ও তথ্য জানা যাবে। এমনও হতে পারে, শর্ত দিয়ে দেওয়া হবে এক বছর। এই এক বছরের মধ্যে শর্ত পূরণ করতে না পারলে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে


ফাঁকা পাস করা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রাজশাহীর পুঠিয়া তারাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কুড়িগ্রাম সদরের পূর্ব কুমারপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মুলদাইদ তালতলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। যশোরের শার্শা উপজেলার নড়াইল ও সবরতলা জুনিয়র স্কুল। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মুষ্টিমেয় কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয় কিন্তু কেউ পাস করেনি


এছাড়াও ৪৬টি মাদ্রাসা পাসের হার খুবই করুন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবারের দাখিল পরীক্ষায় এ ধরনের ৪৬টি মাদ্রাসা ১০ শতাংশ বা তার কম পাস করেছে। যেমন ফরিদপুরের বোয়ালমারীর হরিহর নগর ফাজিল মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসায় ২২ জন পরীক্ষার্থী ছিল। এ মাদ্রাসা থেকে পাসের হার ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশমাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের মাদ্রাসাগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে

আপনার প্রতিক্রিয়া কি?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

মোরশেদ ইসলাম আমি বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছি।